টুইটারে ঘৃণা–বিদ্বেষের শিকার মেগান

মেগান মার্কেল
ছবি: রয়টার্স

ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল বলেছেন, আত্মসংরক্ষণের প্রয়োজনেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এড়িয়ে চলেন তিনি। তাঁর এ কথায় যুক্তিও পাওয়া গেল সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে। তাঁকে লক্ষ্য করে টুইটারে ঘৃণ্য বক্তব্য ও ভুয়া প্রচারের সমন্বিত কর্মসূচি চালানোর তথ্য উঠে এসেছে নতুন এ প্রতিবেদনে।

টুইটারের অ্যানালাইটিকস সেবাদাতা বট সেনটিনেলের তথ্য অনুযায়ী, মেগান মার্কেল ও প্রিন্স হ্যারি দুজনকে লক্ষ্য করেই টুইটারে ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানো হয়। এর মধ্যে মেগানকে লক্ষ্য করেই অপপ্রচার চালানো হয় ৮০ শতাংশের বেশি। যদিও প্রিন্স ও হ্যারি দুজনেই সুস্থ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের পক্ষে প্রচারক।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী বট সেনটিনেল হ্যারি ও মেগান দম্পতি সম্পর্কিত ১ লাখ ১৪ হাজার টুইট বিশ্লেষণ করেছে। এর মধ্যে ৮৩টি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলো থেকে ৭০ শতাংশের বেশি সাসেক্সবিরোধী ভাইরাল টুইট করা হয়েছে।

স্বয়ংক্রিয় অ্যাকাউন্টের সন্ধানে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া গেছে খুব অল্প। যে ৫৫টি অ্যাকাউন্ট থেকে ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানো হয়, তার মধ্যে মাত্র ৪টিকে নিষিদ্ধ করেছে টুইটার।
ওয়াশিংটন পোস্টকে বট সেনটিনেলের প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টোফার বাউজি

প্রতিবেদনে বট সেনটিনেল বলেছে, বিশ্লেষণে ৫৫টি অ্যাকাউন্টকে প্রাথমিকভাবে ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানোর অ্যাকাউন্ট হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। ২৮টি পৃথক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলো প্রথম ৫৫টি অ্যাকাউন্টের টুইটগুলোকে ভাইরাল করতে ব্যবহার করা হয়। এগুলোও ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। এসব অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৩১ জন অনুসারী রয়েছেন। টুইটার অ্যাকাউন্টগুলোর সমন্বিত ঘৃণ্য বক্তব্য প্রচার কর্মসূচিতে একবারে ১ কোটি ৭০ লাখ ব্যবহারকারী পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব।

এসব অ্যাকাউন্ট থেকে ছড়ানো টুইটের কিছু ক্ষেত্রে কোড করা বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়টিও টুইটারের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী অর্গানিক উপায়ে ঘটে না। সেনটিনেলের দাবি, সমন্বিত প্রচার কর্মসূচি চালিয়ে হ্যারি ও মেগান দম্পতির ওপর নিপীড়ন চালানো হয়।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের তথ্য অনুযায়ী বট সেনটিনেল হ্যারি ও মেগান দম্পতি সম্পর্কিত ১ লাখ ১৪ হাজার টুইট বিশ্লেষণ করেছে। এর মধ্যে ৮৩টি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে, যেগুলো থেকে ৭০ শতাংশের বেশি সাসেক্সবিরোধী ভাইরাল টুইট করা হয়েছে।

বট সেনটিনেলের প্রধান নির্বাহী ক্রিস্টোফার বাউজি বলেন, এসব অ্যাকাউন্ট ব্যক্তি–নিয়ন্ত্রিত। ওয়াশিংটন পোস্টকে বাউজি বলেন, স্বয়ংক্রিয় অ্যাকাউন্টের সন্ধানে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। কিন্তু প্রমাণ পাওয়া গেছে খুব অল্প। যে ৫৫টি অ্যাকাউন্ট থেকে ঘৃণ্য বক্তব্য ছড়ানো হয়, তার মধ্যে মাত্র ৪টিকে নিষিদ্ধ করেছে টুইটার।

ওয়াশিংটন পোস্ট বলছে, টুইটারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত অ্যাকাউন্টগুলো থেকে ব্যাপক সমন্বিত প্রচার কর্মসূচি, এক ব্যক্তির একাধিক অ্যাকাউন্ট চালানো বা টুইটারের অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বাউজি বলেন, অ্যাকাউন্টগুলো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে সেখানে কার্যক্রম অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে।
বাউজি বাজফিড নিউজকে বলেন, মেগানবিরোধী টুইটার প্রচার কর্মসূচির মতো কর্মসূচি তিনি বা তাঁর দল আগে দেখেননি। এর কোনো উদ্দেশ্য নেই।

বাউজি বলেন, এই প্রচার কর্মসূচি এমন লোকদের কাছ থেকে আসে, যাঁরা জানেন কীভাবে অ্যালগরিদম বা টুইটারের অপব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া এমনভাবে লুকিয়ে কাজটি করতে হয়, যাতে তা ধরা না পড়ে বা অ্যাকাউন্ট বন্ধ না হয়ে যায়। এ ধরনের কাজ যাঁরা করতে পারেন, তাঁদের দিয়েই এ ধরনের জটিল কর্মসূচি পরিচালিত হতে পারে।

২০১৮ সালে সিডনি সফরে আনন্দঘন এক মুহূর্তে ব্রিটেনের প্রিন্স হ্যারি ও ডাচেস অফ সাসেক্স মেগান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

এর আগে হ্যারি এবং মেগান রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে তাঁদের ভূমিকা থেকে সরে আসার সিদ্ধান্তের একটি কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিষাক্ততাকে উল্লেখ করেছিলেন।