‘ড্রিমারদের’ নাগরিকত্ব দিতে লড়াই চালাবেন বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
ফাইল ছবি: রয়টার্স

অভিবাসননীতি নিয়ে বড় ধরনের ধাক্কা খাওয়ার পর তা নিয়ে ‘গভীর হতাশা’ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরিবারের সঙ্গে শিশুকালে যুক্তরাষ্ট্রে আসা অভিবাসীদের (ড্রিমার) নাগরিকত্বসহ নানা সুবিধা দেওয়ার যে প্রকল্প চালু রয়েছে, গত শুক্রবার তা বন্ধের আদেশ দেন টেক্সাসের একটি ফেডারেল আদালত। ড্রিমারদের নাগরিকত্ব দিতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পাশপাশি আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন তিনি।  

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিবাসননীতি নিয়ে আদালতের আদেশের পর গতকাল শনিবার বাইডেনের পক্ষে এক বিবৃতি দেয় হোয়াহট হাউস। এতে বলা হয়, টেক্সাসের ফেডারেল বিচারক অ্যান্ড্রু হানেনের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করতে বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন। একই সঙ্গে বাইডেন বলেছেন, ড্রিমারদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পন্থা অনুমোদনের মাধ্যমে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে পারে শুধু কংগ্রেস।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে ২০১২ সালে প্রশাসনিক সুরক্ষা আইনের আওতায় ডাকা (ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভাল) কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। অপ্রাপ্ত বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসা লোকজনকে (ড্রিমার) অভিবাসনের সুবিধা দেওয়া হয়েছিল এ কর্মসূচির মাধ্যমে। ফলে প্রায় সাত লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী এই কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত হয়ে কাজের অনুমতি পান। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্মসূচিটি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বিষয়টি মার্কিন সুপ্রিম কোর্টেও গড়িয়েছিল। উচ্চ আদালত রায়ে ট্রাম্পের সে উদ্যোগ আটকে গেলেও ডাকা কর্মসূচির নতুন আবেদন গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেন ড্রিমারদের নাগরিকত্ব প্রদানসহ নানা সুবিধা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

কিন্তু শুরু থেকেই ডাকা প্রকল্পের তীব্র বিরোধী রিপাবলিকান নেতারা। তাই প্রকল্পটি বন্ধ করতে অনেক দিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। প্রকল্পটি বন্ধ চেয়ে টেক্সাসের আদালতে করা আবেদনটিও রিপাবলিকানদের। স্থানীয় সময় শুক্রবার সেই আবেদনের ওপর আদেশ দেন টেক্সাসের ফেডারেল বিচারক হানেন। আদেশে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে চালু হওয়া ডাকা প্রকল্পটি ‘অবৈধ’। সরকারকে অবশ্যই এই প্রকল্প বন্ধ করতে হবে।

আদালতের নতুন আদেশে বাইডেন প্রশাসনের সেই প্রক্রিয়া হোঁচট খেল। সঙ্গে ড্রিমারদের নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়টিও অনিশ্চিত হয়ে গেল। অ্যান্ড্রু হানেনের আদেশের বিষয়টি এখন সুপ্রিম কোর্টে গড়াবে। সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতি এই বিষয়ে আদেশ দেবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেটাই কার্যকর হবে।

ড্রিমারদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ সৃষ্টি করতে ডেমোক্র্যাটরা ইতিমধ্যে কংগ্রেসে একটি বিল উপস্থাপন করেছেন। সেই বিলটি দুই কক্ষের কংগ্রেসে পাস হতে হবে। এই বিলের পক্ষে দূতিয়ালিও শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। আদালতের আদেশের পর কংগ্রেসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ড্রিমারদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ নিশ্চিত করতে বিলটির পক্ষে ভোট দিতে রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, বিলের পক্ষ নিলে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখানো হবে।