দোকান চালাতে প্রতিদিন হাজার মাইল পাড়ি

নিজের উড়োজাহাজে টালিয়া এলিস

টালিয়া এলিসের পরিবারের স্বপ্নটাই অন্য রকম। অস্ট্রেলীয় এই পরিবারের বসবাস নিউ সাউথ ওয়েলসে। সেখান থেকে হাজার মাইলের বেশি দূরের স্থান কুইন্সল্যান্ড। একটি দোকান চালাতে প্রতিদিন এতটা পথ পাড়ি দেবেন, কেউ হয়তো কল্পনাতেও আনতে পারেন না। ঠিক সেই কাজটাই দীর্ঘদিন ধরে করে যাচ্ছে এলিসের পরিবার।

বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এলিস পরিবার নিয়ে থাকেন নিউ সাউথ ওয়েলসে নিজেদের একটি খামারে। আর কুইন্সল্যান্ডের জনবিরল একটা স্থানে আছে তাঁদের একটি মদের দোকান। বার্ডসভিল নামের এলাকাটা আবার মূল শহর থেকে অনেক ভেতরে। সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত পথটা বেছে নিলেও খামারবাড়ি থেকে দোকানের দূরত্ব ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার (১ হাজার ২০০ মাইল)। এতটা পথ সড়কপথে পাড়ি দিয়ে দোকান চালানোর কথা নিশ্চয় কেউ ভাববেন না। কারণ, সেটা করতে গেলে সড়কেই আপনার কেটে যাবে তিন–তিনটি দিন। মাড়াতে হবে প্রত্যন্ত এলাকার দুর্গম রাস্তাঘাট।

এই পথের পুরোটা আবার পিচঢালা রাস্তা নয়। বার্ডসভিল আসলে কুইন্সল্যান্ডের পশ্চিমাঞ্চলীয় সিম্পসন ডেজার্টে অবস্থিত। তাই সড়কপথে গেলে ধুলোবালির অত্যাচার সইতেই হবে। পরিবারটির সুবিধা হচ্ছে, টালিয়া এলিস একজন অভিজ্ঞ পাইলট। তিনি অনায়াসে ছোট আকৃতির উড়োজাহাজ চালাতে পারেন।

টালিয়া এলিস বিবিসিকে বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব একটা উড়োজাহাজ রয়েছে। তাই আমরা সহজেই খামারবাড়ি থেকে কুইন্সল্যান্ডের ওই মদের দোকানে যাতায়াত করতে পারি। সময় লাগে সাড়ে চার ঘণ্টা থেকে পৌনে পাঁচ ঘণ্টা। এটা আমাদের জন্য বেশ সুবিধাজনক। আমরা যদি সকাল সকাল রওনা করতে পারি, তাহলে মধ্যাহ্নভোজের সময় হওয়ার আগেই পৌঁছে যেতে পারি। তবে উড়োজাহাজ ছাড়া এই কাজটা কখনোই সম্ভব হতো না। উড়োজাহাজে যাতায়াত করতে করতে এখন পুরো ঘটনাটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমাদের মনে হয়, পাখাওয়ালা কোনো গাড়িতে চড়ে যাতায়াত করছি।’

যাতায়াতের সমস্যা—সে না হয় উড়োজাহাজের কারণে ঘুচল। কিন্তু এত দূরের একটা মদের দোকান কেন কিনল এলিসের পরিবার? আসলে এটা পরিবারটির একটা স্বপ্ন বাস্তবায়নের উপলক্ষ।

এলিস বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী প্রায়ই উড়োজাহাজে চলাচল করি। মাঝেমধ্যেই বার্ডসভিলের ওপর দিয়ে যেতাম। সব সময়ই ভাবতাম, আমরাও একদিন এখানকার সরাইওয়ালা হয়ে যেতে পারি। কেউ ভাবতেই পারেন, কেন আমরা এত দূরের একটা মদের দোকান কিনে নিলাম। আসলে, আমরা উড়োজাহাজে করে সহজেই সেখানে যাতায়াত করতে পারছি। তা ছাড়া এই মদের দোকানে আছে দক্ষ একদল কর্মী। আমাদের অনুপস্থিতিতে তারা সবকিছু চালিয়ে নিতে সক্ষম। আবার আমাদের সন্তান দুই জায়গাতেই বিচরণ করতে খুব পছন্দ করে। তাই এ সিদ্ধান্ত।’