পথজুড়ে লাখো কাঁকড়া থমকে আছে গাড়ি

সড়কে লাল কাঁকড়ার দল
ছবি: অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল পার্কস কর্তৃপক্ষের সৌজন্যে

পথে সুনসান নীরবতা। কিন্তু থমকে আছে গাড়ি। কারণ, সামনে যাওয়ার উপায় নেই। ভালো করে খেয়াল করলে দেখা যাবে, পথজুড়ে লাখ লাখ লাল কাঁকড়া। পথের এক পাশ থেকে আরেক পাশে অবিরাম ছুটে চলেছে কাঁকড়াগুলো। এ কারণেই গাড়ির থমকে যাওয়া।

প্রতিবছর অক্টোবর–নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিসমাস দ্বীপে এমন চিত্র চোখে পড়বে। বছরের এ সময়ে লাল কাঁকড়া দলবেঁধে জলের কাছাকাছি ছুটে যায়। এ যেন লাখো কাঁকড়ার অভিবাসন!

ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখণ্ড থেকে পশ্চিমাঞ্চলে ভারত মহাসাগরে ক্রিসমাস দ্বীপের অবস্থান। বছরের এ সময়ে সেখানে শীত মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টির দেখা মেলার পরপরই সেখানকার মাঠ–ঘাট, পথ–প্রান্তর, বন–জঙ্গল ভরে ওঠে লাল কাঁকড়ায়। জঙ্গল থেকে কাঁকড়ার দল ছুটতে শুরু করে ভারত মহাসাগরের দিকে।

বছরের এ সময়ে কাঁকড়ার মিলনের মৌসুম। ভারত মহাসাগরের জলঘেঁষে ডিম পাড়বে কাঁকড়াগুলো। মূলত এ কারণে জঙ্গল ছেড়ে দলে দলে লাল কাঁকড়া জলের দিকে ছুটে যায়। একেকটি দলের নেতৃত্বে থাকে সবচেয়ে বড় পুরুষ কাঁকড়া। সেটিকে অনুসরণ করে অন্য কাঁকড়ারা ছুটতে থাকে।

কাঁকড়ার এই চলার পথে পড়ে শহর। লাল কাঁকড়ার দল শহর অতিক্রমের সময় সেখানকার সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কাঁকড়াগুলোর নির্বিঘ্ন চলাচলের জন্য অনেক জায়গায় ওভারব্রিজ ও আন্ডারপাস বানিয়ে দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ।

অস্ট্রেলিয়া সরকারের হিসাবে, ক্রিসমাস দ্বীপে প্রায় পাঁচ কোটি লাল কাঁকড়ার বাস। স্থানীয় ন্যাশনাল পার্ক কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্রিসমাস দ্বীপে প্রতিবছর লাল কাঁকড়ার দলবেঁধে অভিবাসনের ঘটনা ঘটে। এটা পৃথিবীর অনন্য একটি প্রাকৃতিক অভিবাসন প্রক্রিয়া। মূলত অক্টোবর–নভেম্বরে এমন অভিবাসন দেখা গেলেও অনেক সময় তা ডিসেম্বরের শেষ ভাগে কিংবা জানুয়ারির শুরুতে দেখা যায়।