পোশাক করোনা ঠেকাবে- বিজ্ঞাপন দিয়ে গুনতে হলো মিলিয়ন ডলার জরিমানা

শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লরনা জেন বিজ্ঞাপন দেয় যে তাদের পোশাকে এল জে শিল্ড নামের যুগান্তকারী একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রযুক্তি সব ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধ করে।

শুক্রবার তাদের জরিমানা করে আদালত বলেছেন, প্রতিষ্ঠানটির এই দাবি প্রতারণামূলক, লোক ঠকানো এবং বিপদ তৈরির মতো। রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা আদালতের রায় মেনে নিয়েছে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক সরবরাহকারী পোশাকের বিষয়ে তাদের ভুল তথ্য দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বিল ক্লার্কসন বলেছেন, ‘এক বিশ্বস্ত সরবরাহকারী আমাদের পণ্য দিয়েছিল, কিন্তু এটি ঠিকমতো কাজ করেনি।’
বিল ক্লার্কসন বলেন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি এই পণ্য যুক্তরাষ্ট্র, চীন, তাইওয়ান ও অস্ট্রেলিয়ার অনেক স্থানে বিক্রি করার কথা বলায় বিশ্বাস করেছিলেন তাঁরা।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, এই পোশাক ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সক্ষম। ক্রেতারা এর সুফল পাবেন—এ রকম আশা করেছিলেন তাঁরা। করোনা মহামারির মধ্যে জুলাই মাসে পোশাকটির বিপণন শুরু করে লরনা জেন। এরপরই অস্ট্রেলিয়ান কম্পিটিশন অ্যান্ড কনজ্যুমার কমিশন (এসিসিসি) তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়।

শুক্রবার দেওয়া রায়ে ফেডারেল আদালতের বিচারক বলেন, কোম্পানিটি পণ্যের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ভিত্তি রয়েছে—এমন তথ্য ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরেছিল, যা সত্য নয়। ক্রেতাদের ভুল তথ্য সরবরাহ করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের বিপথে পরিচালিত করায় কোম্পানিটিকে জরিমানা করা হয়েছে।

এসিসিসি-এর চেয়ারম্যান রড সিমস বলেন, ‘এটা একধরনের ভয়াবহ কর্মকাণ্ড, জনস্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তারা এমন একটা দাবি করছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘তাদের পুরো প্রচারণায় ক্রেতাদের লক্ষ্য করা হয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী চলমান মহামারি রোধে সুরক্ষা নিশ্চিত করার আশা দেখিয়েছিল তারা।’
যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুরজুড়ে লরনা জেন-এর শাখা রয়েছে। এসব জায়গায় বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি যৌক্তিক কারণ ছাড়া আগামী তিন বছরের মধ্যে কোম্পানিটি কোনো পোশাক ভাইরাসপ্রতিরোধী বলে বিজ্ঞাপনও প্রচার করতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসসংক্রান্ত বেআইনি বিজ্ঞাপন প্রচার করায় এই কোম্পানিকেই ৪০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা করে দেশটির কেন্দ্রীয় ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ (থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন)।

তারা জানায়, এ ধরনের বিজ্ঞাপন অস্ট্রেলিয়ানদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এটা নিরাপত্তা নিয়ে ভুল বার্তা দিতে পারে, যার ফলে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কিত বিষয়ে মানুষ অসতর্ক হয়ে যেতে পারে।