প্রথম ডোজের পর হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪%

অক্সফোর্ডের গবেষকেরা টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন
ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকার কার্যকারিতা স্পষ্ট হচ্ছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি কমে ৯৪ শতাংশ। ফাইজার ও বায়োএনটেকের উদ্ভাবিত টিকা এই ঝুঁকি কমায় ৮৫ শতাংশ। এই দুই টিকাই গুরুতর সংক্রমণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকর।


এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্কটল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা। গবেষণায় পুরো স্কটল্যান্ডের ৫৪ লাখ জনসংখ্যার তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।


এতে দেখা গেছে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি যথাক্রমে ৯৪ ও ৮৫ শতাংশ কমিয়েছে।
এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউশার ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক আজিজ শেখ ওই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে তা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদী হওয়ার দারুণ কারণ হতে পারে।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, তিনি যে ফলাফলের কথা বলছেন, তা প্রাথমিক তথ্যনির্ভর। তবে আশার কথাও শুনিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি অত্যন্ত উৎসাহ পেয়েছি। টিকা যে কোভিড-১৯ সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দিতে পারে, এর জাতীয় প্রমাণ এখন আমাদের কাছে আছে।’

আজিজ শেখ বলেন, অন্য দেশগুলো এখন একই রকম দুই টিকা ও একই রকম কৌশল গ্রহণ করবে বলে আশা করছেন।
স্কটল্যান্ডে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণার জন্য গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে ১১ লাখ ৪ হাজার মানুষকে টিকা প্রয়োগ করা হয়। এর মধ্যে স্কটল্যান্ডের ২১ শতাংশ জনগণ টিকার প্রথম ডোজ নেন। এতে দেখা যায়, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার চার সপ্তাহ পরে হাসপাতালে ভর্তি ৮১ শতাংশ কমে গেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য দুটি টিকার ফলাফলই একত্র করে হিসাব ধরা হয়েছে।


স্কটল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা জিম ম্যাকমেনামিন বলেন, ‘গবেষণায় যে ফল পাওয়া গেছে, তা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমরা এখন টিকা থেকে প্রত্যাশার পরিবর্তে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেতে শুরু করেছি।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটও তৈরি করছে। আর সেরাম ইনস্টিটিউটের এই টিকা বাংলাদেশে ৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়োগ শুরু হয়েছে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ পর্যন্ত তিনটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে সবার আগে ফাইজারের টিকার অনুমোদন দেওয়া হয়। সর্বশেষ অনুমোদন পেয়েছে অক্সফোর্ডের টিকা। অনুমোদন পাওয়া অন্যটি হলো মার্কিন কোম্পানি মডার্নার উদ্ভাবিত করোনার টিকা।