ফাইজারের টিকায় ৯০% পর্যন্ত সুরক্ষার দাবি

ছবি: রয়টার্স

নতুন টিকা দিয়ে কোভিড-১৯ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষার দাবি করেছে উৎপাদনকারী দুটি প্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকেই ফাইজার ও বায়োএনটেক নামের দুটি প্রতিষ্ঠান টিকা তৈরির চেষ্টা করে আসছিল। এবার প্রতিষ্ঠান দুটি জানিয়েছে, তাদের তৈরি টিকা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকর।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ৬টি দেশের প্রায় ৪৩ হাজার ৫০০ মানুষের ওপর নতুন তৈরি এই টিকা প্রয়োগ করা হয়েছিল। টিকা নেওয়ার পর কারও দেহেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। এসব তথ্য জানিয়ে ফাইজার ও বায়োএনটেক বলেছে, এটি বিজ্ঞান ও মানবতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।

মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার ও বায়োএনটেক বলেছে, চলতি মাসের শেষের দিকে এই টিকার জরুরি অনুমোদন পাওয়ার জন্য আবেদন করা হবে।

এর আগে ফাইজার বলেছিল, তারা অক্টোবরের মধ্যেই করোনার টিকার ফল জেনে যাবে। পরে প্রতিষ্ঠানটি আবার জানিয়েছিল, এ বছরের মধ্যে তাদের টিকার ফল জানা যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত নভেম্বর মাসেই চলে এল টিকার কার্যকারিতার ফলাফল।

প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, টিকা নিয়ে প্রাথমিক বিশ্লেষণে এর ৯০ শতাংশ কার্যকারিতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

ফাইজার আগেই বলে দিয়েছিল, যদি টিকা পরীক্ষা ঠিকঠাক চলে এবং টিকা অনুমোদন পায়, তবে যুক্তরাষ্ট্রে ৪ কোটি ডোজ টিকা সরবরাহ করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি। তখন বলা হয়েছিল, নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে টিকাটির জরুরি অনুমোদনের জন্য আবেদন করার কথা ভাবা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে অনেকগুলো টিকা নিয়ে কাজ শুরু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের এখন ১৫০টির বেশি টিকা উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ৪৪টি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ১১টি টিকা পরীক্ষার চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চলমান থাকা এসব টিকার মধ্যে ফাইজার ও বায়োএনটেকের ক্ষেত্রেই প্রথম কার্যকারিতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল।

ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তুরস্কে। তাতে দেখা গেছে, টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগের সাত দিন পর কোভিড-১৯–এর বিরুদ্ধে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা তৈরি করেছে টিকাটি। এ ক্ষেত্রে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে টিকাটির দুটি ডোজ দিতে হয়েছে।

ফাইজার জানিয়েছে, চলতি বছরের শেষে টিকাটির ৫ কোটি ডোজ তারা সরবরাহ করতে পারবে। আর ২০২১ সালের শেষে সরবরাহ করতে পারবে ১৩০ কোটি ডোজ টিকা।

ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালবার্ট বোরলা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসংকট শেষ করতে বিশ্বজুড়ে মানুষকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বেশ এগিয়ে গেছি।’ আর বায়োএনটেকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক উর সাহিন এই অর্জনকে ‘মাইলফলক’ বলে অভিহিত করেছেন।

তবে বিবিসি জানিয়েছে, উপস্থাপন করা এই উপাত্ত চূড়ান্ত বিশ্লেষণের নয়। কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত প্রথম ৯৪ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষার ভিত্তিতে এই হিসাব পাওয়া গেছে। সম্পূর্ণ ফলাফল বিশ্লেষণের পর এই উপাত্তে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে।