বিশ্বের দুই-পঞ্চমাংশ উদ্ভিদ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে

বিশ্বের অনেক উদ্ভিদ বিলুপ্তির পথে রয়েছে
ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের দুই-পঞ্চমাংশ উদ্ভিদ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঝুঁকিতে থাকা উদ্ভিদ বিলুপ্তির আগেই তার নাম ও প্রজাতি বর্ণনার জন্য তাঁরা সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনস, কিউ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ভিদ ওষুধ, জ্বালানি ও খাবার হিসেবে ব্যাপক সম্ভাবনাময়। কিন্তু খাদ্যনিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক বিষয় মোকাবিলায় উদ্ভিদ ও ছত্রাক ব্যবহারের সুযোগ হারাতে হচ্ছে।

বিশ্বের ৪২টি দেশের ২০০ জনের অধিক গবেষকের করা গবেষণার ভিত্তিতে ‘স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ড’স প্ল্যান্টস অ্যান্ড ফাংগি’ শীর্ষক মূল্যায়নটি করা হয়েছে।

জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলনের প্রাক্কালে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাস মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের ওপর এই প্রতিবেদন চাপ তৈরি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কিউ–এর বিজ্ঞান বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক আলেকজান্দ্রে আন্তোনেলি বলেন, ‘আমরা বিলুপ্তির যুগে বাস করছি। এটি ঝুঁকির খুবই উদ্বেগজনক দৃশ্য। আর এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি রাখে। আমরা সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছি।

কারণ, খোঁজ পেয়ে নামকরণ করার আগেই উদ্ভিদ দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এসব উদ্ভিদের সব কটিতে বর্তমান বিশ্বের প্রয়োজনীয় সমস্যা সমাধানের সূত্র থাকতে পারে। এর মধ্যে ওষুধ থেকে শুরু করে এখনকার সময়ে যে মহামারির মুখোমুখি হচ্ছি, সে সমস্যার সমাধানও থাকতে পারে।’

প্রতিবেদনটিতে বিদ্যমান উদ্ভিদ প্রজাতির সামান্য অনুপাতই খাবার ও জৈব জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাত হাজারের বেশি উদ্ভিদ ভবিষ্যতের ফসল হিসেবে সম্ভাবনা রাখে। তবু কেবল মুষ্টিমেয় কিছু উদ্ভিদ বিশ্বের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রায় আড়াই হাজার উদ্ভিদ রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী কয়েক মিলিয়ন মানুষের জন্য শক্তি সরবরাহ করতে পারে। তবে তার মধ্যে কেবল ভুট্টা, আখ, সয়াবিন, পাম তেল, রাই ও গম জৈব জ্বালানির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

গবেষকেরা বলছেন, বিলুপ্তির ঝুঁকি আগের ধারণার চেয়ে আরও বেশি হতে পারে। ২০১৬ সালে যেখানে ২১ শতাংশ উদ্ভিদ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ছিল, তা এখন ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।

গবেষকেরা দ্রুত ঝুঁকি নির্ণয় করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার ও উদ্ভিদ সংরক্ষণে আরও তহবিল বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

গবেষকেরা দেখেছেন, ৭২৩টি ঔষধি গাছ বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এসব গাছের অতি ব্যবহারের কারণে এ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ২০১৯ সালে ১ হাজার ৯৪২টি উদ্ভিদ ও ১ হাজার ৮৮৬টি ছত্রাকের নতুন নামকরণ করা হয়েছে, যা খাবার, পানীয় ও ওষুধ হিসেবে কাজে লাগতে পারে।

আরও পড়ুন