ভারতে বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ পেল অক্সফোর্ডের টিকা

বিশেষজ্ঞদের এই সুপারিশ বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে ডিসিজিআইয়ের কাছে। তারা চূড়ান্ত অনুমোদন দিলে ভারতে এই টিকার ব্যবহার শুরু হবে।

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট
প্রতীকী ছবি: এএফপি

বছরের প্রথম দিনেই সুখবর পেলেন ভারতবাসী। ভারতের পুনে শহরের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোভিশিল্ড’ টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, এবার বিশেষজ্ঞদের এই সুপারিশ বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) কাছে। ডিসিজিআইয়ের চূড়ান্ত অনুমোদন ছাড়া ভারতে কোনো ওষুধ বা টিকার ব্যবহার বা প্রয়োগ করা যায় না।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে ভারতে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ায় (এসআইআই) প্রস্তুত হচ্ছে করোনা প্রতিষেধক ‘কোভিশিল্ড’। যুক্তরাজ্য ও আর্জেন্টিনা এই টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে।

গত বুধবার ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিও জরুরি প্রয়োগ নিয়ে বৈঠক করে। সেই বৈঠকেই ঠিক হয় অতিরিক্ত তথ্যের বিচারে শুক্রবার দ্বিতীয় দফার বৈঠক হবে। সংবাদমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপারিশ করেছে।

ভারতের হায়দরাবাদ শহরে ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) যৌথ উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে করোনা প্রতিষেধক ‘কোভ্যাক্সিন’। কোভিশিল্ডের মতো জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমতি চেয়েছে তারাও। ফাইজার অবশ্য আরও কিছুদিন সময় চেয়েছে।

চলতি মাসেই ভারত প্রথম দফার প্রতিষেধক প্রয়োগে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেই সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। সে জন্য প্রস্তুতিও তুঙ্গে। কাল শনিবার থেকে গোটা দেশে সে জন্য মহড়া শুরু হবে। প্রথম পর্যায়ে ৩০ কোটি নাগরিককে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের মহাপরিচালক রণদীপ গুলেরিয়ার ব্যাখ্যা—কোভিশিল্ড প্রতিষেধক যেকোনো সাধারণ রেফ্রিজারেটরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যায়।

সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে টিকা নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ৩ কোটি টিকা পাবে। প্রত্যেককে নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে দুটি ডোজ নিতে হবে।

ভারতে কোভিশিল্ডের দাম পড়বে প্রতি টিকা চার–ছয় ডলার। প্রতিষেধক বিনা মূল্যে দেওয়া হবে নাকি টাকা লাগবে, সেই সিদ্ধান্ত সরকার অবশ্য এখনো জানায়নি। দুই মাস আগে বিহার নির্বাচনে বিজেপির ইশতেহারে বিনা মূল্যে টিকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। সে নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছিল, সবাইকেই নিখরচায় টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা হয়নি।