ভারতের পরিস্থিতি মর্মান্তিক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান

মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস।
ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। এই সংকট মোকাবিলায় ভারতকে সহায়তায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

সোমবার সাংবাদিকদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেন, ভারতের পরিস্থিতি মর্মান্তিক। জরুরি সরঞ্জাম ও সহায়তা দিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সাধ্যমতো চেষ্টা করছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নিজেদের সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে ভারত। দেশটিতে সোমবার ৩ লাখ ৫২ হাজার ৯৯১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৮১২ জনের। রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। অক্সিজেনের অভাব সংকটকে তীব্রতর করেছে।

অনেক রোগীর পরিবার হাসপাতালের শয্যার সন্ধান এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিচ্ছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধান বলেন, হাজার হাজার অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ভ্রাম্যমাণ ফিল্ড হাসপাতাল এবং গবেষণাগারের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করছেন তাঁরা।

মহামারি মোকাবিলায় ভারতকে সহায়তা করার জন্য দুই হাজার ৬০০ এর বেশি বিশেষজ্ঞকে কাজে লাগানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিশ্বজুড়ে ৩১ লাখের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেওয়া করোনাভাইরাস মহামারির সর্বশেষ ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে প্রায় ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারত। তাদের

সহায়তায় ভেন্টিলেটর এবং টিকা তৈরির কাঁচামাল পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। আরও অনেক দেশ সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।

২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনে প্রথম কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপরে এক বছরের বেশি সময়ে বিশ্বে ১৪ কোটি ৭২ লাখের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ লাখের বেশি।

তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস সোমবার বলেন, গত নয় সপ্তাহ ধরে বিশ্বে নতুন করোনা সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। গত সপ্তাহে যে সংখ্যক মানুষের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে তা মহামারি শুরুর প্রথম পাঁচ মাসের সমান।

করোনার সংক্রমণের পরিসংখ্যান নিয়মিত হালনাগাদকারী ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য বলছে, আজ রাত পৌনে দুইটা পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত ও মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে সোয়া তিন কোটির বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ২৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এরপরে করোনা শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় পর পর রয়েছে ভারত (১,৭৬,২৫,৭৩৫) ও ব্রাজিল (১,৪৩,৪০,৭৮৭)। আর মৃতের সংখ্যার হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের পর রয়েছে ব্রাজিল (৩,৯০,৯২৫) ও মেক্সিকো (২,১৪,৯৪৭)। আর ভারতে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ৯৭ হাজার ৮৮০ জন। অন্যদিকে মেক্সিকোয় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৩ লাখ ২৮ হাজার ৩৯১ জন। তবে ভারতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যে সংখ্যক মানুষের সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তা বিশ্বে একক কোনো দেশে একদিনে আক্রান্তের রেকর্ড করছে।