মইসির শেষবিদায়ের সময়ও গোলাগুলি

হাইতির ঐতিহাসিক শহর ক্যাপ-হাইতিয়েনে দেশটির হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ছবি: রয়টার্স

হাইতির ঐতিহাসিক শহর ক্যাপ-হাইতিয়েনে দেশটির হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। নিহত প্রেসিডেন্টের শেষবিদায়ের সময়ও ঘটেছে গোলাগুলির ঘটনা। এতে ঘটনাস্থলে থাকা অতিথিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

স্থানীয় সময় শুক্রবার শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রসহ নানা দেশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। গুলির শব্দে তাঁরা দ্রুত নিরাপদে সরে যান। অনুষ্ঠানে ছিলেন জোভেনেল মইসির স্ত্রী মার্টিন মইসি এবং তিন সন্তানও।

৭ জুলাই রাতে নিজ বাসভবনে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন জোভেনেল মইসি। এ সময় আহত হন স্ত্রী মার্টিন মইসি। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মিয়ামির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে গত শনিবার তিনি দেশে ফেরেন।
শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে মার্টিন মইসি বলেন, ‘আমরা বিচারের দাবিতে কাঁদছি। আমরা প্রতিশোধ চাই না, বিচার চাই।’

এর আগে মইসির মরদেহ কফিনে করে অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসা হয়। যাঁদের কাঁধে করে কফিন আসে, তাঁদের পরনে ছিল সেনা উর্দি। সেখানে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তাঁকে বাবার কবরের পাশেই সমাহিত করা হয়।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শেষকৃত্যের সময় বিক্ষোভ চলছিল মূল ঘটনাস্থলের বাইরে। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া পুলিশপ্রধানসহ অনেকেরই প্রেসিডেন্টের হত্যাকাণ্ডের পেছনে হাত আছে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। শোনা যায় গুলির শব্দ। প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকেই কাঁদানে গ্যাসের গন্ধ পেয়েছেন বলেও জানিয়েছেন। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

পুলিশ-বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের সময় সেখানের একটি দোকান লুটপাটের খবর পাওয়া গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দোকান থেকে ওয়াশিং মেশিনসহ অন্যান্য আসবাব নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

এদিকে গত মঙ্গলবার হাইতির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন অ্যারিয়েল হেনরি। দায়িত্ব পাওয়ার পর নিহত প্রেসিডেন্ট মইসি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সামনে আনেন তিনি। হেনরি বলেন, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।

জোভেনেল মইসি ২০১৭ সাল থেকে হাইতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। মইসি হত্যাকাণ্ডে ২৮ জন ভাড়াটে ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাইতির পুলিশ। তাদের মধ্যে ২৬ জন কলম্বিয়ার। আর ২ জন হাইতি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। এই দলের ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৩ জন পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। আরও ৮ জন পলাতক।