যুক্তরাষ্ট্রে ‘খুনে ভীমরুলের’ বাসা

এই ভিমরুলের বিষ মৌমাছির চেয়ে সাতগুণ বিষাক্ত। মৌমাছির চেয়ে এদের হুলও কয়েকগুণ শক্ত। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশেও এই খুনে ভিমরুলের দেখা পাওয়া গেছে সম্প্রতি

গবেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রে খুনে ভিমরুলের বাসা খুঁজে পেয়েছেনছবি: রয়টার্স

এশিয়ান জায়ান্ট হরনেট হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় আকৃতির ভিমরুল। খুনে প্রকৃতির জন্য এদের ‘খুনে ভিমরুল’ও বলা হয়। এই প্রজাতির ছোট এক ঝাঁক ভিমরুল একটি মৌচাকে থাকা সব মৌমাছিকে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মেরে ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো এই প্রজাতির ভিমরুলের বাসা খুঁজে পেয়েছেন গবেষকেরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে গত ডিসেম্বরে প্রথমবারের মতো খুনে ভিমরুলের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। তবে সেবার এই প্রজাতির ভিমরুলের কোনো বাসা খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কৃষি দপ্তর জানায়, তাদের কীটতত্ত্ববিদেরা খুনে ভিমরুলের বাসা খুঁজে পেয়েছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম। কানাডার সঙ্গে সীমান্তবর্তী ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের ছোট শহর ব্লেইনে এক ব্যক্তির সম্পত্তির ভেতর একটি গাছে রয়েছে ওই বাসা। শনিবার থেকে কীটতত্ত্ববিদদের ওই ভিমরুল অপসারণে কাজ শুরু করার কথা ছিল।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কৃষি দপ্তর বলেছে, তাঁদের গবেষকেরা প্রথমে রেডিও ট্র্যাকারের মাধ্যমে কয়েকটি খুনে ভিমরুল ধরেন। এরপর ওই ভিমরুলগুলোই তাঁদের পথ দেখিয়ে নিজেদের বাসায় নিয়ে যায়। ব্লেইন শহরের ওই ব্যক্তিগত সম্পত্তির ভেতর গবেষকেরা আবিষ্কার করেন, একটি গাছে বাসা বেঁধেছে ভিমরুলগুলো। সেখানে অনেকগুলো ভিমরুল অনবরত যাওয়া-আসা করছে।

গবেষকেরা জানিয়েছেন, খুনে ভিমরুলেরা সাধারণত মাটিতেই বাসা বাঁধে। তবে কখনো কখনো এরা মৃত গাছের কোটরেও বাসা বাঁধে। ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কৃষি দপ্তর বলেছে, ব্লেইন শহরের ওই ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিক ভিমরুলগুলো অপসারণের অনুমতি দিয়েছেন। এমনকি প্রয়োজনে গাছটিও কেটে ফেলার অনুমতি দিয়েছেন তিনি।

খুনে ভিমরুল
ছবি: রয়টার্স


মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে জানানো হয়, ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কৃষি দপ্তর বলেছে, ভিমরুলের আক্রমণাত্মক প্রকৃতির এই প্রজাতি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় নয়। এরা মৌমাছি ও অন্যান্য পতঙ্গ শিকার করে খায়। লম্বায় এগুলো দুই ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। এগুলো এতটাই আক্রমণাত্মক হয় যে এরা কয়েক দফায় হুল ফোটালে তা মানুষের জন্যও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। অবশ্য কৃষি দপ্তরটি বলছে, সাধারণত এই প্রজাতির ভিমরুল মানুষকে আক্রমণ করে না। তবে এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
খুনে ভিমরুলের বিষ মৌমাছির চেয়ে সাতগুণ বিষাক্ত। মৌমাছির চেয়ে এদের হুলও কয়েকগুণ শক্ত। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশেও এই খুনে ভিমরুলের দেখা পাওয়া গেছে সম্প্রতি। ওই প্রদেশটি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া।