তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে হাইতির শিশুরা

সেন্ট লিউক হাসপাতালে এক শিশুর ওজন মাপা হচ্ছে। হাইতি, ২৯ জানুয়ারি, ২০২০ছবি: রয়টার্স

মহামারি, ক্রমবর্ধমান অপরাধ এবং স্বল্প সম্পদের কারণে হাইতিতে এ বছর মারাত্মক অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি হবে বলে আশঙ্কা করছে ইউনিসেফ।  
জাতিসংঘের সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর পাঁচ বছরের নিচের বয়সী অন্তত ৮৬ হাজার শিশু অপুষ্টিজনিত রোগে আক্রান্ত হবে। গত বছর সংখ্যাটি ছিল ৪১ হাজার।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।

কয়েক দশক থেকেই সেখানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা চলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগেও বিপর্যস্ত দেশটি। সম্প্রতি সেখানে সহিংসতার ঘটনাও বাড়ছে।

ইউনিসেফের তথ্যমতে, তীব্র অপুষ্টি ক্যাটাগরি মারাত্মক তীব্র অপুষ্টি ক্যাটাগরির চেয়ে কম বিপজ্জনক। দেশটিতে গত বছর তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা পাঁচ বছরের নিচের বয়সী শিশুর সংখ্যা ৬১ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ৩৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এ বছর এ সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ১৭ হাজারে গিয়ে ঠেকবে।

লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে নিযুক্ত ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক জিয়েন গফ সম্প্রতি হাইতি ভ্রমণ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘দেশটিতে এত সংখ্যক শিশুকে অপুষ্টিতে ভুগতে দেখে আমি সত্যি কষ্ট পেয়েছি। অপুষ্টিতে ভোগা অনেকেরই এখনই চিকিৎসা প্রয়োজন।’

ইউনিসেফের তথ্যমতে, হাইতিতে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ লোকের বসবাস। এর মধ্যে ৪৪ লাখ মানুষ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এর মধ্যে ১৯ লাখই শিশু। হাইতিতে জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেশ ঘূর্ণিঝড়প্রবণ। ইউনিসেফ হুঁশিয়ার করে বলেছে, এই সময়ে পুষ্টিকর খাদ্যস্বল্পতা তীব্র আকার ধারণ করবে।

মহামারির কারণে হাইতিতে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়েছে। ফলে টিকা দেওয়ার হার ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ফলে দেশটিতে ডিফথেরিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। এ বছর এই রোগের প্রকোপ মহামারিতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইউনিসেফ বলছে, যেসব শিশুকে টিকা দেওয়া হয়নি, তারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। অপুষ্টিতে ভোগা এবং অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকি তাদের বেশি।

ইউনিসেফের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগামী মাস থেকে তারা শিশুদের জন্য বিশেষ খাদ্য প্রকল্প চালু করবে। এই প্রকল্পের জন্য জরুরি ভিত্তিতে তাদের ৩০ লাখ মার্কিন ডলার তহবিল প্রয়োজন।