বিদায় নাইপল

>

ভি এস নাইপল (১৭ আগস্ট ১৯৩২—১১ আগস্ট ২০১৮)। ছবি: নাসির আলী মামুন, ফটোজিয়াম, ২০ নভেম্বর ২০১৬
ভি এস নাইপল (১৭ আগস্ট ১৯৩২—১১ আগস্ট ২০১৮)। ছবি: নাসির আলী মামুন, ফটোজিয়াম, ২০ নভেম্বর ২০১৬

গত শনিবার মারা গেছেন কথাশিল্পী ভি এস নাইপল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই লেখক নোবেল পেয়েছিলেন ২০০১ সালে। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা

লেখক ভি এস নাইপলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার সঙ্গে আমার মনের চোখে ভেসে উঠেছিল তাঁর সেই চেহারা, যা দেখতে পেয়েছিলাম ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে, ঢাকা লিটারেরি ফেস্টিভ্যালে। তখন তাঁর বয়স ৮৩ বছর পেরিয়ে গেছে, ভুগছিলেন পারকিনসন্স রোগে। হুইলচেয়ারে বসে তিনি যখন উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করছিলেন, তখন তাঁর কপাল ও ভুরু ছিল কোঁচকানো। সেই একই অভিব্যক্তি দেখেছিলাম পরদিন সন্ধ্যায় তাঁকে নিয়ে আয়োজিত একমাত্র অধিবেশনেও। গত শনিবার তাঁর মৃত্যুর পর ইউরোপ-আমেরিকার ইংরেজি ভাষার পত্রপত্রিকার অনলাইন সংস্করণগুলোতে এ লেখকের সম্পর্কে প্রকাশিত লেখালেখির সঙ্গে তাঁর যেসব ছবি দেখতে পেলাম, সেগুলোর কয়েকটাতেও দেখি তাঁর ভুরু-কোঁচকানো চেহারা। এমনকি, গত শতকের সত্তর ও আশির দশকে, যখন তিনি ছিলেন সুদর্শন-স্বাস্থ্যবান যুবক, তখনকার ছবিতেও দেখি সেই একই অভিব্যক্তি।

আমি ভাবি, তাঁর এই অভিব্যক্তি তাঁর সমগ্র জীবনের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির নির্যাসের প্রকাশ কি না।

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা এবং পূর্বপুরুষের জীবনের গল্প তাঁর জন্য মধুর ছিল না। পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ভারতের গাঙ্গেয় সমভূমির কোনো এক জনপদের সন্তান। তাঁদের জন্মভূমি থেকে বিচ্যুত করেছিল চরম দারিদ্র্য। পিতামহ ১৮৮০ দশকে জীবিকার তাড়নায় দেশত্যাগ করেন অনেকটা ক্রীতদাসের মতো। তাঁর মতো দরিদ্র ও ভাগ্যাহত অনেক মানুষকে ব্রিটিশরা জাহাজ ভর্তি করে নিয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আরেক প্রান্তে: দক্ষিণ আমেরিকার কাছাকাছি ক্যারিবীয় অঞ্চলের এক ছোট্ট দ্বীপে, যার নাম ত্রিনিদাদ। সেখানে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রভুদের আখের খামারে বাঁধা মজুর হিসেবে খাটতে খাটতে জীবন পার করেছেন তাঁর পিতামহ।

তার প্রায় আধা শতক পরে, ১৯৩২ সালে যখন বিদ্যাধর সূর্যপ্রসাদ নাইপলের জন্ম হয়, তখন ত্রিনিদাদের মোট লোকসংখ্যা ছিল প্রায় চার লাখ। তাদের মধ্যে দেড় লাখ ছিল ভারতীয় হিন্দু ও মুসলমান, বাকিদের অধিকাংশই আফ্রিকান। চাগুয়ানা নামে এক ছোট্ট মফস্বল শহরে নানাবাড়িতে জন্ম, সাত বছর বয়সে সেখান থেকে রাজধানী পোর্ট অব স্পেনে চলে যাওয়া। সেখানেও নানাবাড়িতেই বসবাস। বাবা ছিলেন ঘরজামাই, নানার পরিবারটি ছিল বিশাল একান্নবর্তী, সব সময় কলহ ও কোলাহলে পরিপূর্ণ।

কদর্য দারিদ্র্য ও অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে থাকা ওই জীবন থেকে নাইপল পালাতে চেয়েছিলেন। ১৮ বছর বয়সে একটা বৃত্তি পাওয়ার ফলে সেই সুযোগ আসে; তিনি পড়াশোনা করতে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড চলে যান; বলা চলে জন্মভূমি ত্রিনিদাদ ত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর দারিদ্র্য কাটে না, উপরন্তু ১৯৫০ দশকের ইংল্যান্ডে বর্ণবাদ তাঁকে মূল জীবনধারার সঙ্গে একাত্ম হতে দেয় না। তিনি নিজেকে অনাহূত-আগন্তুক হিসেবে আবিষ্কার করেন। প্যাট্রিসিয়া হেইল নামে এক ইংরেজ সহপাঠিনীর সঙ্গে প্রেমে ও বিয়ে, বন্ধ্যা অসুখী দাম্পত্যজীবন, পতিতাগমন, মার্গারেট গুডিং নামের এক অ্যাংলো-আর্জেন্টাইন নারীর সঙ্গে প্রবল যৌন সম্পর্ক—সব মিলিয়ে এক চরম অসুখী জীবন ছিল তাঁর। ব্যক্তিগত জীবনাচরণে বদরাগী, দুর্মুখ ও অত্যাচারী হিসেবে পরিচিত এবং রাজনৈতিক চিন্তাভাবনায় ‘প্রতিক্রিয়াশীল’ হিসেবে কঠোরভাবে সমালোচিত লেখক ভি এস যেন এক স্ক্যান্ডালের নাম।

ভি এস নাইপলের সাড়াজাগানো দুই বই: উপন্যাস—আ হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস। আর ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা প্রবন্ধগ্রন্থ—অ্যান এরিয়া অব ডার্কনেস
ভি এস নাইপলের সাড়াজাগানো দুই বই: উপন্যাস—আ হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস। আর ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা প্রবন্ধগ্রন্থ—অ্যান এরিয়া অব ডার্কনেস

লেখালেখির ক্ষেত্রেও তাঁর জীবনাভিজ্ঞতা ছিল কষ্টকর। লেখা তাঁর কাছে সহজ কাজ বলে মনে হতো না। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল লেখক হবেন। এই স্বপ্ন তিনি পেয়েছিলেন তাঁর বাবার কাছ থেকে; তাঁর বাবা ছিলেন পেশায় সাংবাদিক, কিন্তু তাঁর উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল লেখক হওয়ার। তিনি একটা গল্পের বই লিখেছিলেনও বটে। কিন্তু মাত্র ৪৬ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু ঘটে। ভি এস নাইপল বাবার লেখক হওয়ার স্বপ্ন সফল করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না কী লিখবেন, কী বিষয়ে লিখবেন। ইংল্যান্ডে বিবিসির এক সাহিত্যবিষয়ক অনুষ্ঠানের জন্য ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার একপর্যায়ে তিনি নিজেকে বাধ্য করেন লিখতে। তখন তাঁর সামনে চলে আসে ত্রিনিদাদের সেই গরিব, অশিক্ষিত, জীবিকা-তাড়িত মানুষগুলো, যারা তাঁরই মতো স্থানচ্যুত, ঘরহীন। ‘মিগেল স্ট্রিট’ নামে এক কল্পিত সড়কের দুই পাশের বাসিন্দাদের নিয়ে তিনি লেখেন তাঁর প্রথম বইয়ের গল্পগুলো। তিনি পরপর চারটি বই লেখেন, যেগুলোর পাত্রপাত্রীরা সবাই তাঁর ফেলে আসা ত্রিনিদাদের মানুষ। চতুর্থ বই আ হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে, যখন তাঁর বয়স ২৯। এই উপন্যাস তাঁকে বিরাট স্বীকৃতি ও সুখ্যাতি এনে দেয়। এটি তাঁর বাবার গল্প, যাঁর নিজের কোনো বাড়ি ছিল না। ভি এস নাইপলের কাছে বাড়ি নিছক বাড়ি ছিল না, ছিল এই পৃথিবীতে নিজের একটু জায়গার প্রতীক। তাঁর বাবার সেই জায়গাটুকু ছিল না। জীবনের শেষ পর্যায়ে তিনি একটা বাড়ি বানাতে পেরেছিলেন বটে, কিন্তু নাইপলের বিবেচনায় সেই বাড়ি ছিল এক ‘হোমলেস হাউস’। কারণ মিস্টার বিশ্বাস হোমলেস বা গৃহহীন হয়েছিলেন তাঁর জন্মেরও আগে, তাঁর বাবার গৃহচ্যুতির মধ্য দিয়ে।

স্থান ও স্থানচ্যুতি এবং তার পরিণামে সৃষ্টি হওয়া আগন্তুক দশা নাইপলকে সারা জীবন তাড়া করেছে। এই বিষয়টি তাঁর গল্প-উপন্যাসগুলোর একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে। ব্যক্তিগতভাবে ব্রিটিশ উপনিবেশের দূরতম প্রান্ত থেকে তিনি উঠে যেতে পেরেছেন ইংল্যান্ডের একদম কেন্দ্রে; কিন্তু মানসিকভাবে তাঁর স্থানচ্যুতির প্রতিকার ঘটেনি। ইংল্যান্ডেও তিনি নিজেকে আবিষ্কার করেছেন ‘আউটসাইডার’ বা আগন্তুক হিসেবে। শুধু তা-ই নয়, পূর্বপুরুষের জন্মভূমি ভারত, যা তাঁর মনের মধ্যে ছিল একটা স্বপ্নের মতো, তিরিশ বছর বয়সে সেই দেশ দেখার পর তাঁর মনে হয়েছে, এই দেশও তাঁর নয়। আসলে, এই পৃথিবীর কোথাও তাঁর জন্য একটু জায়গা নেই; স্থানচ্যুতিই তাঁর চূড়ান্ত পরিণতি।

লেখকজীবনের একদম শুরু থেকেই তাঁর অন্যতম প্রধান সমস্যা ছিল লেখার বিষয় খুঁজে পাওয়া। আ হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস লেখার পর তাঁর সমস্ত বিষয় ফুরিয়ে গিয়েছিল। তখন তিনি শুরু করেন ভ্রমণ। ১৯৬২ সালে তিনি প্রথমবারের মতো ভারতে যান এবং প্রচণ্ড হতাশ হন। তাঁর সপ্নভঙ্গ ঘটে: তিনি দেখতে পান, পঙ্কিলতার অন্ধকারে ডুবে আছে তাঁর পূর্বপুরুষের জন্মভূমি। ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লেখা তাঁর প্রবন্ধের বই অ্যান এরিয়া অব ডার্কনেস ১৯৬৪ সালে প্রকাশের পর তিনি অত্যন্ত কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন। ভারত সরকার বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। কিন্তু ভারত তাঁর পিছু ছাড়ে না, তিনি বারবার ভারতে ফিরে যান। ভারত নিয়ে তিনি মোট তিনটি বই লিখেছেন, প্রতিটি বই কঠোর সমালোচনার শিকার হয়েছে।

নাইপলের কাছে আরেকটি আগ্রহের বিষয় ছিল সংস্কৃতির বিচ্যুতি। কোনো জনগোষ্ঠীর ধর্মান্তরের ফলে তাদের সংস্কৃতিতে কী ধরনের রূপান্তর ঘটতে পারে, এই কৌতূহল থেকে তিনি ১৯৭৯ সালে ভ্রমণ করেন এশিয়ার চারটি দেশ, যেগুলোর অধিবাসীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ধর্মান্তরিত হয়েছে। ইরান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান ভ্রমণের পর ১৯৮১ সালে তিনি প্রকাশ করেন অ্যামং দ্য বিলিভার্স: অ্যান ইসলামিক জার্নি নামের একটি প্রবন্ধের বই। ১৯৯৫ সালে তিনি ওই চারটি দেশ দ্বিতীয়বার ভ্রমণ করেন। তারপর লেখেন বিয়োন্ড বিলিফ: ইসলামিক এক্সকারশান্স অ্যামং দ্য কনভার্টেট পিপল নামে আরও একটি বই। অনারব বা ধর্মান্তরিত মুসলমানদের নিয়ে লেখা ওই দুটি ভ্রমণকাহিনি নাইপল সম্পর্কে বিরাট বিতর্ক সৃষ্টি করে।

বিশেষত রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে বিতর্কিত হওয়ার ফলে নাইপলের নোবেল পুরস্কার পেতে অনেক দেরি হয়েছে বলে বলা হয়। জানা যায়, সম্ভাব্য নোবেল বিজয়ীদের তালিকায় তাঁর নাম আসা শুরু করে ১৯৭৩ সালে। কিন্তু তিনি তা পান ২০০১ সালে। তাঁর অন্যতম জীবনীকার ব্রুস কিং-এর বরাতে আমরা জানতে পারি, দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে নোবেল কমিটি নাইপলকে পুরস্কার দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে; তারা এমন কাউকে পুরস্কার দিয়েছে, যিনি নাইপলের চেয়ে কম বিতর্কিত, কম দুর্মুখ; তারা প্রতিবার এমন কাউকে খুঁজেছে, যাঁর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা নাইপলের চেয়ে বেশি ‘প্রগতিশীল’।

অনেকেই বলেন, কোনো সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম বোঝার ও বিচার করার সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো তাঁর ব্যক্তিগত স্বভাবচরিত্র, মনের গড়ন, চিন্তাভাবনা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা। লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে যত বেশি জানা যায়, তাঁর সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে বোঝাপড়া বা বিচার তত সঠিক হয়। যদিও নাইপল নিজের সাহিত্যকর্মের গুণ সম্পর্কে উচ্চমন্য ছিলেন; তবু, আমার ধারণা, নাইপল এই অভিমত সম্পর্কে সচেতন ছিলেন এবং তিনি এ-ও জানতে যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ও রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা সম্পর্কে বিতর্কের ফলে তাঁর সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে ভুল মূল্যায়নের আশঙ্কা আছে। তিনি তাঁর নোবেল বক্তৃতার একটা বড় জায়গাজুড়ে এ বিষয়ে নিজের মত তুলে ধরেছেন। তিনি মার্সেল প্রুস্তের সাহায্য নিয়ে বলেন, লেখকের জীবনের খুঁটিনাটি তথ্যের আলোকে তাঁর কোনো বই বুঝতে চাওয়া বিভ্রান্তিকর পন্থা। কারণ, বাইরে থেকে একজন লেখককে যেমন দেখা যায়, তাঁর বই সেই দৃশ্যমান সত্তার সৃষ্টি নয়। বরং তা এক ভিন্ন, গভীরতর সত্তার সৃষ্টি, যে সত্তা দৈনন্দিন জীবনাভ্যাস, সামাজিক জীবনের মধ্য দিয়ে প্রতিভাত হয় না, লোকচক্ষুর আড়ালে থেকে যায়। একটা বইকে বোঝার ও বিচার করা সঠিক পন্থা পাঠকের নিজের সত্তার ভেতরে তাকে স্থাপন করা, নিজের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা, নিজের বুকের গভীরে তাকে পুনর্নির্মাণ করা।

নাইপলের এই পরামর্শ মানলে দেখা যায়, তাঁর গল্প-উপন্যাসগুলোর পাত্র-পাত্রীদের সঙ্গে আমাদের সংযোগ ঘটছে কতকগুলো সর্বমানবিক অভিজ্ঞতা ও গভীর উপলব্ধির মধ্য দিয়ে। তাঁর আরও একটা বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি সারা জীবন ধরে মানবজাতির সেই অংশটির গল্পই বলেছেন, যাদের নিজেদের কোনো কণ্ঠস্বর নেই, যাদের ইতিহাস চাপা পড়ে আছে। তাঁর অধিকাংশ গল্প-উপন্যাসের চরিত্র গরিব, বঞ্চিত মানুষ, ইতিহাসে যারা জায়গা পায় না। তিনি তাদের জীবন পর্যবেক্ষণ করেছেন নিখাদ সত্যনিষ্ঠার সঙ্গে। অসাধারণ সততার সঙ্গে বলেছেন তাদের গল্প।

নোবেল কমিটি তাঁকে পুরস্কৃত করার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছিল: তাঁর লেখাগুলো হলো ‘ইনকরাপ্টিবল স্ক্রুটিনি অব ওয়ার্কস, দ্যাট কমপেল আস টু সি দ্য প্রেজেন্স অব সাপ্রেসড হিস্টরিজ’।

তবে আমি মনে করি, স্থানচ্যুত, গরিব, বঞ্চিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাপা পড়া ইতিহাসের নিখাদ পর্যবেক্ষণের দায়িত্বটা নীতিবাগীশের; শিল্পীর প্রধান দায়িত্ব এটা নয়, নাইপলের এই দায়বোধ ছিলও না। আমার কাছে ভি এস নাইপল গুরুত্বপূর্ণ কথাশিল্পী হিসেবে, যাঁর গল্প-উপন্যাসগুলো সরল সৌন্দর্যমণ্ডিত পথে মানুষের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ঘটায়, তাদের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধিগুলোর সঙ্গে আমরা সংহতি বোধকরি।

বিদায়, কথাশিল্পী ভি এস নাইপল।