জাইকার আপত্তি ঠেলে মেট্রোরেলে'অযোগ্য' পরামর্শক নিয়োগ

দাতা সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) ঘোর আপত্তি সত্ত্বেও মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘বিধিবহির্ভূত ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়’ পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকার নিয়োগসংক্রান্ত একটি চুক্তিও সই করেছে বলে আজ শুক্রবার বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক খবরে বলা হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিপি) ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নিপ্পন কোই নামের ওই পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত করে চুক্তি করেছে। অভিযোগ রয়েছে, নিয়মবহির্ভূত ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে এই কাজ দেওয়া হয়েছে। আর এ কারণে সরকারকে এখন কয়েক শ কোটি টাকার বাড়তি ঋণের বোঝা মাথায় নিতে হবে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে ইউএনবি জানায়, দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের ওপর নজরদারি করে এমন একটি এনজিওর কাছ থেকে নিপ্পন কোই সম্পর্কে অভিযোগ পায় জাইকা। অধিকার উন্নয়ন সংস্থা নামের ওই এনজিওটির অভিযোগ ছিল, পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পেতে যেসব যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করতে পারেনি নিপ্পন কোই। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর জাইকা ওই প্রতিষ্ঠানটিকে নিয়োগ দিতে আপত্তি তোলে। কিন্তু আপত্তি উপেক্ষা করে ৯২৮ দশমিক ১৭ কোটি টাকা পারিশ্রমিক দেওয়ার শর্তে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নিপ্পন কোইকেই নিয়োগ দিয়েছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে থাকবে ২০ দশমিক এক কিলোমিটার এলিভেটেড রেললাইন, ১৬টি স্টেশন, একটি ডিপো এবং ২৪টি রোলিং স্টোক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রটি আরও জানায়, শুরুতে এই প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য যোগাযোগ বিভাগ, ডিএমআরটিপি ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ শাখা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আবেদনপত্র দেওয়ার আহ্বান জানায়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সংক্ষিপ্ত তালিকায় তিনটি প্রতিষ্ঠান আসে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো ফ্রান্সের সিস্ট্রা এসএ, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্টস কোম্পানি এবং জাপানের নিপ্পন কোই।

পরে অধিকার উন্নয়ন সংস্থা পর্যবেক্ষণ করে নিপ্পন কোই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলে। সংস্থাটি জানায়, এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাজের যে যোগ্যতার দরকার ছিল, নিপ্পন কোই তা দেখাতে পারেনি। তার পরও সংক্ষিপ্ত তালিকায় আসা তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিপ্পন কোইকে সর্বোচ্চ নম্বর দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।