নারী শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতি কুমুদিনীর জয়াপতির

জয়াপতি।
ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক (মরণোত্তর) পাচ্ছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়াপতি। দেশের নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার এই ছোট মেয়েকে পদক দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আগামী রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ওই অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যোগ দিয়ে বঙ্গমাতা পদক বিতরণ করবেন।

জয়াপতির পুরস্কার পাওয়ার খবরে উচ্ছ্বসিত ভারতেশ্বরী হোমসের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক কবি ও সাহিত্যিক হেনা সুলতানা। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাবাকে হারিয়ে এক সংকটকালে জয়াপতি কুমুদিনী হাল ধরেন। তাঁর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিতে পুরো কুমুদিনী চত্বরে আনন্দের বন্যা বইছে।

দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ছিলেন কুমুদিনী হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৭১ সালে তাঁকে ও তাঁর ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ধরে নিয়ে যায় রাজাকাররা। আজ পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মেলেনি। বাবা নিখোঁজ হওয়ার পর ছোট মেয়ে জয়াপতি কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার হাল ধরেন। তাঁর নেতৃত্বে সংস্থার সেবামূলক কাজে গতি সঞ্চার হয়। বিশেষ করে কুমুদিনী হাসপাতাল ও দেশের নারী শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠান ভারতেশ্বরী হোমসে নতুন জীবন ফিরে আসে।

আরও পড়ুন

জয়াপতি ১৯৩২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মির্জাপুরে জন্ম নেন। তিনি ১৯৫০ সালে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের কিংস কলেজ থেকে শরীরচর্চা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। দেশে ফিরে তিনি বাংলাদেশের প্রথম আবাসিক বালিকা বিদ্যালয় ভারতেশ্বরী হোমসের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেন। দীর্ঘ ৩০ বছর কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। জয়াপতি দায়িত্বে থাকাকালে ১৯৮২ সালে কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থা স্বাধীনতা পুরস্কার পায়। ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর জয়াপতি মারা যান। তিনি মির্জাপুরে ‘ছোট দি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

ভারতেশ্বরী হোমসের সাবেক অধ্যক্ষ ও কুমুদিনী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক (শিক্ষা) ভাষাসৈনিক প্রতিভা মুৎসুদ্দি বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে অনন্য অবদান রেখেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। তাঁর নামে দেওয়া পদকের মাধ্যমে দীর্ঘদিন পরে হলেও জয়াপতির কাজ রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। এ খবরে আমরা কত যে আনন্দিত, ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান বলেন, জয়াপতির এই পদকপ্রাপ্তির খবর শুনে তিনি খুবই আনন্দিত।