প্রতীক হিসেবে 'দাঁড়িপাল্লা' বরাদ্দ নয়

কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে প্রতীক হিসেবে দাঁড়িপাল্লা বরাদ্দ না দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। যদি কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে ওই বরাদ্দ বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছে।
‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন স্বাক্ষরিত ওই চিঠি গতকাল বুধবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন বরাবরে পাঠানো হয়।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের চিঠি পেয়েছেন। দ্রুত এই চিঠি কমিশনের সভায় উত্থাপন করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বলেন, ‘চিঠি আমরা এখনো দেখিনি। তবে আদালতের নির্দেশের ভিন্ন কিছু করার সুযোগ নেই।’
আদিষ্ট হয়ে জানাচ্ছেন উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠাকাল হতে ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহার করা হয়। ফলে ‘দাঁড়িপাল্লা’ অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচার তথা সুপ্রিম কোর্টের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি যদি কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
চিঠির ভাষ্য, এসব বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের উপস্থিতিতে ১২ ডিসেম্বর ফুল কোর্ট সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে, ‘দাঁড়িপাল্লা’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে একমাত্র সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহৃত হবে। অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হোক।
চিঠির শেষাংশে বলা হয়, এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের ফুল কোর্ট সভার ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বা কোনো নির্বাচনে প্রার্থীর প্রতীক হিসেবে ‘দাঁড়িপাল্লা’ বরাদ্দ প্রদান না করা এবং যদি বরাদ্দ করা হয়ে থাকে তাহলে, ওই বরাদ্দ বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে সাময়িক নিবন্ধন দেয় নির্বাচন কমিশন। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট আবেদন করা হয়েছিল। এই রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।