হলুদের দাম বাড়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর আশা চাষিদের

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার হাটবাজারে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতি মণ শুকনো হলুদের দাম ৪০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কয়েক বছর ধরে উপজেলার হলুদচাষিরা ন্যায্য দাম পাননি। লোকসানের কারণে এ বছর হলুদ চাষও কম হয়েছে। তবে দাম বাড়ার এই প্রবণতা বজায় থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বলে মনে করছেন চাষিরা।
দীঘিনালার পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় বাজারগুলো থেকে আড়তদারেরা হলুদ কিনে সরবরাহ করছেন ঢাকা ও চট্টগ্রামে। গত বছর প্রতি মণ শুকনো হলুদ ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ বছর প্রতি মণ শুকনো হলুদ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ থেকে ৪ হাজার ৮০০ টাকায়।
হলুদচাষিরা জানান, ২০১১-১২ সালে প্রতি মণ হলুদ বিক্রি হয়েছিল ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায়। বাড়তি লাভের আশায় অনেক চাষি তখন হলুদ চাষে ঝুঁকেছিলেন। তবে এর পর প্রতিবছরই হলুদের দাম কমেছে। গত বছর প্রতি মণ শুকনো হলুদ চার হাজার টাকার নিচে বিক্রি হয়েছে। এতে হতাশ হয়ে অনেক চাষি এ বছর আর হলুদ চাষ করেননি। দাম কিছুটা বাড়ায় অন্তত চাষের খরচ তুলতে পারবেন বলে মনে করছেন তাঁরা।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, গত বছর দীঘিনালায় ১ হাজার ৬৮৭ একর পরিমাণ জমিতে হলুদ চাষ হয়েছিল। প্রতি একরে ফলন হয়েছিল এক দশমিক ৫৩৬ মেট্রিক টন। আর এ বছর হলুদ চাষ হয়েছে ১ হাজার ৫১২ একর জমিতে। প্রতি একরে ফলন হয়েছে ১ দশমিক ৪৪০ মেট্রিক টন।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, হলুদের আকার ভালো হলে চার মণ কাঁচা হলুদ সেদ্ধ করে শুকিয়ে এক মণ শুকনো হলুদ পাওয়া যায়। আর আকার ভালো না হলে পাঁচ মণ কাঁচা হলুদ থেকে এক মণ শুকনো হলুদ পাওয়া যায়।
বিভিন্ন এলাকার হলুদচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রতি মণ হলুদের দাম গড়ে ৬০০ টাকা বেড়েছে। গত বছর হলুদের ফলন ভালো হলেও দাম ছিল কম। দাম বাড়ার কারণে চাষিরা লোকসান কটিয়ে উঠতে পারবেন।
দীঘিনালার বড়াদম এলাকার হলুদচাষি সুমন চাকমা জানান, তিনি জুমের ফসলের সঙ্গে চার মণ কাঁচা হলুদ লাগিয়েছিলেন পাহাড়ি জমিতে। ফলন হয়েছে ২৫ মেণর মতো। ২৫ মণ কাঁচা হলুদ শুকিয়ে পেয়েছেন সাড়ে চার মণ শুকনো হলুদ। ওই পরিমাণ হলুদ বিক্রি করেছেন ১৮ হাজার টাকায়। এভাবে লাভ হতে থাকলে হলুদের চাষ বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
দীঘিনালা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুপন চাকমা বলেন, এ বছর গত বছরের চেয়ে ১৭৫ একর জমিতে হলুদ চাষ কম হয়েছে। ক্রমাগত লোকসানের কারণে অনেক চাষি হলুদ চাষ করেননি। দাম বাড়তে থাকায় আগামী বছর হলুদ চাষ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।