টঙ্গীতে আগুনে ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ চারজনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীতে একটি রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্যসহ চারজনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল শনিবার এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে জীবন রক্ষার মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের তিনজন সাহসী ফায়ার ফাইটারসহ চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। এটি একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমি নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দিনরাত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিয়োজিত থাকেন বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে তাঁরা অন্যের জীবন বাঁচানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁদের এ আত্মত্যাগের কাছে জাতি চিরঋণী। এ দুর্ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিল যে দায়িত্ব পালনের সময় তাঁরা কত বড় ঝুঁকি বহন করেন। তাঁদের এ মহৎ ত্যাগ জাতির ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ দুর্ঘটনায় শুধু কয়েকজন প্রাণ হারাননি; বরং দৃষ্টান্ত দেখা গেল সাহস, মানবিকতা আর কর্তব্যনিষ্ঠার প্রতীকের। ফায়ার সার্ভিস দেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও সাহসী বাহিনী। সংকটময় সময়ে তারাই প্রথম ঝাঁপিয়ে পড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সেই মহৎ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের জীবন দিতে হয়েছে। এটি সমগ্র জাতির জন্য গভীর শোকের বিষয়।
শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সান্ত্বনা জানান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রিয়জনেরা নিছক প্রাণ হারাননি, তাঁরা জাতির জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। দেশের প্রতিটি মানুষ তাঁদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি আপনাদের বেদনা ভাগ করে নিচ্ছি এবং দোয়া করছি, আল্লাহ যেন আপনাদের ধৈর্য ও শক্তি দেন এই কঠিন সময়ে।’
নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘এই বেদনাবহ ক্ষতি কখনো পূরণ হওয়ার নয়। তবে তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে, যাতে আমরা একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে টঙ্গীর সাহারা সুপার মার্কেট–সংলগ্ন একটি রাসায়নিকের গুদামে আগুন লাগে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে রাসায়নিকের ড্রাম বিস্ফোরিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের চার কর্মী ও এক কর্মকর্তা দগ্ধ হন। এ ঘটনায় দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিন সদস্য ও ঘটনাস্থলের পাশের একটি হার্ডওয়্যার দোকানের এক কর্মচারী মারা যান।