সিদ্ধান্ত গ্রহণের বড় জায়গা জাতীয় সংসদ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেছেন, 'সেখানে (সংসদ) নারীর প্রতিনিধিত্বটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি হতেই হবে।'
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে 'জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন'শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন। এই গোলটেবিলের আয়োজন করেছে প্রথম আলো। গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন। শুরুতে সংসদে নারী আসন নিয়ে ধারণাপত্র তুলে ধরেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।
নারীনেত্রী ফওজিয়া মোসলেম বলেন, 'সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যদি নারী না থাকে, তাহলে নারীর পক্ষে আইন তৈরি হওয়া, নারীর বৈষম্য দূর করার যে বাস্তবতা তৈরি করা, পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করা, সেটা সম্ভব হয় না।'
নারীর জন্য সংরক্ষিত আসন থাকার কারণ হিসেবে দুটি বিষয় তুলে ধরেন ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, ‘প্রথমত আমাদের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরাজ করছে, সেখানে নারীর প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত জটিল।’ দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি সমাজে নারীর এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার সুযোগ না থাকার বিষয় উল্লেখ করেন।
ফওজিয়া মোসলেম বলেন, একজন নারী যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তখন তাঁকে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়। সেই কারণে সংরক্ষিত আসন রাখা দরকার। বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ভারসাম্য রক্ষার জন্য নারীদের প্রতিনিধিত্ব সংসদে হাজির করে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে মহিলা পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘সমাজে নারীর প্রতি এত বিদ্বেষ আছে, সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের চাপ সৃষ্টি করে যেতেই হবে। আমরা সেটি করে যাচ্ছি।’ তিনি সংসদের আসন বাড়িয়ে ৪০০ করা এবং সেখানে নারীর জন্য ১৫০ আসন সংরক্ষণের কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি নির্বাচনে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানান।
গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন। অংশ নিয়েছেন নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভীন হক, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, নারীপক্ষের সভানেত্রী গীতা দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও শিক্ষার্থী নাজিফা জান্নাত।