প্রতিবন্ধী শিশুকে পার্কে ঢুকতে না দেওয়ায় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

রংপুরে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এক শিশুকে পার্কে ঢুকতে না দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে রিট করা হয়েছে। রিটে বিশেষ সরঞ্জাম ও হুইলচেয়ার চলাচলের ব্যবস্থা (র‍্যাম্প) রাখার মাধ্যমে পার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, বিপণিবিতান, রেস্টুরেস্ট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির প্রবেশাধিকার নিশ্চিতের আরজিও রয়েছে।

‘পার্কে ঢুকতে দেওয়া হলো না বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকে’ শিরোনামে একটি দৈনিকে ৭ মে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে আইনজীবী তনয় কুমার সাহা ও ফয়সাল আহমেদ গতকাল সোমবার রিটটি করেন। এতে একজন অভিভাবক বা সঙ্গীসহ প্রত্যেক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু বা শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সব সরকারি পার্কে বিনা মূল্যে এবং বেসরকারি পার্কে ৫০ শতাংশ ছাড়ে প্রবেশ নিশ্চিতের প্রার্থনাও রয়েছে।

১০ বছর পার করে কেবল ১১–তে পড়েছে আল আয়মান ইয়ানাত। ইয়ানাতের সেরিব্রাল পালসি বা মস্তিষ্কে পক্ষাঘাতসহ বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধিতা আছে। গত ২৬ এপ্রিল রংপুরের চিকলি ওয়াটার পার্কের কিডস জোনে হুইলচেয়ারসহ মেয়েকে নিয়ে ঢুকতে গেলে রিজা রহমানকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ৩ মে রিজা একাই মেয়েকে নিয়ে রংপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। ২৭ এপ্রিল রিজা রহমান রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। তাতে তিনি পার্কসহ বিনোদনের বিভিন্ন জায়গায় হুইলচেয়ার নিয়ে যাতে যাওয়া যায়, এ ধরনের নির্দেশিকা টানানোর আবেদন জানান।

২০১৩ সালে সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করেছে। আইনটিতে প্রবেশগম্যতাকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আইনে প্রবেশগম্যতা বলতে ভৌত অবকাঠামো, যানবাহন, যোগাযোগ, তথ্য এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিসহ জনসাধারণের জন্য প্রাপ্য সব সুবিধা ও সেবায় অন্যদের মতো প্রত্যেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সমসুযোগ ও সম–আচরণ প্রাপ্তির অধিকার বোঝানো হয়েছে। এই আইনের অধীন সংঘটিত কোনো অপরাধের জন্য সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিজে অথবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মা-বাবা, বৈধ বা আইনানুগ অভিভাবক অথবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংগঠন মামলা দায়ের করতে পারবে।

আরও পড়ুন

রিট আবেদনকারী আইনজীবী তনয় কুমার সাহা আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‌বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় রিটটি শুনানির জন্য রয়েছে। আগামী সপ্তাহে রিটের ওপর শুনানি হতে পারে।’

রিটের প্রার্থনায় আরও দেখা যায়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩ অনুসারে চিকলি ওয়াটার পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে।

রিটে সমাজকল্যাণসচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রংপুরের জেলা প্রশাসক ও চিকলি ওয়াটার পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুন