সড়ক পরিবহন আইনে শাস্তি কমানোর উদ্যোগ আত্মঘাতীমূলক: টিআইবি

সড়ক দুর্ঘটনাপ্রতীকী ছবি

সড়ক পরিবহন (সংশোধন) আইন, ২০২৪–এর কয়েকটি ধারায় শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমানোর উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। টিআইবি বলছে, আইনটির এমন সংশোধন হলে সড়কে অনিয়ম, দুর্নীতি, নৈরাজ্য আরও বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। পাশাপাশি সড়ক-মহাসড়কে অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক মৃত্যুর মিছিলও দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে টিআইবি। তাতে বলা হয়েছে, আইনে সংশোধন এনে শাস্তি কমানোর পেছনে সরকারের ওপর রাজনৈতিক মদদপুষ্ট মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের যে প্রভাব রয়েছে, তা বলা বাহুল্য। এই সংশোধনী সংসদে গৃহীত হলে জনগণের স্বার্থ ভুলুণ্ঠিত হবে। এ ‘আত্মঘাতী’ পথ থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে টিআইবি বলেছে, অন্তত ১২টি ধারায় পরিবর্তন এনে এবং অধিকাংশ ধারায় চালক, চালকের সহকারীদের জেল–জরিমানা ও শাস্তি কমিয়ে সড়ক পরিবহন সংশোধন আইন-২০২৪–এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনের ৬৯, ৭০, ৮১, ৮৪, ৮৫, ৮৬, ৯০, ৯৮, ১০৫ ধারায় শাস্তি ও জরিমানার পরিমাণ কমানো হয়েছে।

সংশোধনপ্রক্রিয়ার কোনো ধাপেই প্রস্তাবিত সংশোধনীর খসড়া খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জন্য উন্মুক্ত না করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি।

তরুণ শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ প্রণীত হওয়ার পর তার কার্যকর বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে উল্লেখ করেছে টিআইবি। সংস্থাটি বলছে, আইনটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না করায় সড়কে বিশৃঙ্খলা, অনাচার ও নিরাপত্তাহীনতার মাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েছে। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত সংশোধনীর ফলে আইনটি তার উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে আরও দুর্বল হবে এবং মালিক-শ্রমিক পক্ষের হাতে সড়ক ব্যবস্থাপনার জিম্মিদশা আরও বাড়বে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যেখানে জরিমানা ও শাস্তির বিধান যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, সেখানে সংশোধনীর মাধ্যমে শাস্তি কমিয়ে দেওয়া হলে সড়কে বিশৃঙ্খলা বাড়াবে এবং জনগণের জন্য আরও বেশি অনিরাপদ হয়ে উঠবে।

সড়ক পরিবহন আইন ২০২৪-এ যানবাহনের বিমা বাধ্যতামূলক করা [ধারা ৬০ (২)], সুপারভাইজার সংযুক্ত করা (ধারা ৭১) এবং গণপরিবহনে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন অথবা নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া দাবি বা আদায়–সংক্রান্ত ধারা লঙ্ঘনের দণ্ড আলাদাভাবে করা (ধারা ৮০) হয়েছে। এ তিনটি সংশোধনীকে ‘সতর্ক সাধুবাধ’ জানিয়েছে টিআইবি।