কমিটি করে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিটের শুনানি ২৭ মার্চ

সুপ্রিম কোর্ট
ফাইল ছবি

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কোন কর্তৃত্বে পুলিশ বেপরোয়া হামলা চালিয়েছে, কমিটি গঠন করে তা তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট শুনানির জন্য ২৭ মার্চ দিন রেখেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে আজ মঙ্গলবার রিটটি উপস্থাপন করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত ২৭ মার্চ শুনানির জন্য দিন রাখেন।

এর আগে নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪ প্রার্থী ১৯ মার্চ ওই রিটটি করেন। এতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের প্রতি ওই নির্দেশনা দেওয়ার আরজি রয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়। সভাপতি প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন (২০২৩-২৪) হয়। এর মধ্যে ১৩ মার্চ নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত উপকমিটির আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. মনসুরুল হক চৌধুরী ‘ব্যক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এ অবস্থায় নির্বাচন পরিচালনার উপকমিটির আহ্বায়ক হিসেবে মো. মনিরুজ্জামানকে মনোনীত করেন সমিতির সভাপতি, সম্পাদকসহ নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা। পাল্টা হিসেবে বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবীরা এ এস এম মোকতার কবির খানকে আহ্বায়ক মনোনীত করেন।

আরও পড়ুন

পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানের মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থীদের মনোনীত আহ্বায়ক ভোটের কার্যক্রম শুরু করতে গেলে বাধা দেয় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। বিএনপিপন্থী কিছু আইনজীবী ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেন। এ নিয়ে ১৪ মার্চ রাতে সমিতি ভবনে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর রেশ ভোটের প্রথম দিনে অর্থাৎ ১৫ মার্চ সকাল থেকেই দেখা যায়।

নির্বাচন পরিচালনাসংক্রান্ত কোনো উপকমিটির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে, এমন প্রশ্নে তর্কে জড়ায় দুই পক্ষ। এর কিছুক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের পিটিয়ে সমিতির মিলনায়তন (ভোটকেন্দ্র) থেকে বের করে দেয়। পুলিশের হামলায় আইনজীবী, সাংবাদিকসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। উপকমিটির আহ্বায়ক নিয়ে বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের আপত্তি এবং এর জেরে ভাঙচুর, পুলিশের পিটুনি, হট্টগোল ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে ১৫ ও ১৬ মার্চ ভোট হয়।

আরও পড়ুন

আনুষ্ঠানিক নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা না দিলেও নতুন করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি করেছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এদিকে ১৬ মার্চ রাতে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফলে সভাপতি-সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সব কটিতেই জয় পায় আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্যানেলের আইনজীবীরা।

রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, সমিতি ভবনে ১৫ মার্চ রিট আবেদনকারীদের ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের পুলিশের পেটানো, নির্মমভাবে আহত করা এবং রিট আবেদনকারীদের এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযান কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না—এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইনসচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপকমিশনার ও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।