আত্মহত্যা রোধে সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘আশা, প্রশান্তি এবং পদক্ষেপ বিষয়ক আলাপন’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচক ও অংশগ্রহণকারীরাছবি: সংগৃহীত

আত্মহত্যা বেড়ে যাচ্ছে। আত্মহত্যাকে জনস্বাস্থ্যের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করে প্রতিরোধের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান দরকার। প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সামাজিক-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। শিক্ষার্থীদের চাপ কমাতে কারিকুলামেও পরিবর্তন আনতে হবে।

আজ রোববার বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট (ব্র্যাক আইইডি) আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা উঠে আসে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ‘আশা, প্রশান্তি এবং পদক্ষেপ বিষয়ক আলাপন’ শীর্ষক এই সেমিনারে আত্মহত্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে একত্র করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

আরও পড়ুন

সেমিনারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক এ কিউ এম শফিউল আজম বলেন, প্রতিটি দিন, ক্ষণকে গুরুত্ব দিতে হবে যেন আত্মহত্যা শব্দটি সামনে না আসে। কাজে, চিন্তায় ও মননে পরিবর্তন আনতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, কারিকুলাম এমনভাবে করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা রোবট না হয়ে মানবিক হয়ে গড়ে ওঠে। কারিকুলামে সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলিংও রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির সহ–উপাচার্য মো. মাহমুদুর রহমান আত্মহত্যা প্রতিরোধের ওপর জোর দিতে বলেন। তিনি বলেন, সুখী ও স্বাস্থ্যবান প্রজন্ম যেন গড়ে ওঠে, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে। এ জন্য অ্যাকশন প্ল্যান দরকার। শহুরে জীবনে কেউ কাউকে চেনে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আত্মহত্যা প্রতিরোধের অন্যতম উপায় হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ বাড়ানো। কমিউনিটির মধ্যে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ থাকতে হবে। একে অপরের কথা শুনতে হবে।

আরও পড়ুন

আত্মহত্যাকে জনস্বাস্থ্যের সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করার আহ্বান জানান ব্র্যাক আইইডির রিসার্চ লিড ও প্রোগ্রাম হেড সমীর রঞ্জন নাথ। তিনি বলেন, দেশে আত্মহত্যা বাড়ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যা প্রবণতা বাড়ছে। দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাও মানসিক চাপ তৈরি করে। প্রতিটি জীবনই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার, সমাজ ও দেশকে আত্মহত্যা রোধে কাজ করতে হবে।

অভিনেত্রী সারা যাকের বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে যত আসবে মানুষ তত সচেতন হবে এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে পারবে। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সমাজের প্রতি সবারই দায় আছে। তারকাদের জীবনেও অন্ধকার জগৎ থাকে। তাঁরা হতাশায় ভোগেন, সমস্যায় জর্জরিত হন। এসব থেকে তাঁরা নিজেদের কীভাবে সারিয়ে তুলেছেন, সেগুলো যদি তাঁরা সামনে নিয়ে আসেন, তাহলে অন্যদের তা অনুপ্রাণিত করবে।

আরও পড়ুন

ব্র্যাক আইইডির মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা টিম লিড এবং সহকারী অধ্যাপক তাবাসসুম আমিনা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তাঁদের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

সেমিনারে নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন কার্টুনিস্ট মোরশেদ মিশু ও সংগীত পরিচালক সৈয়দ নাফিস। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ব্র্যাকের প্যারা কাউন্সিলর রিনা ইয়াসমীন ও ব্র্যাক হেলথ প্রোগ্রামের ডেপুটি ম্যানেজার ইশরাত জাহান।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন