রাজবাড়ীতে নতুন করে নদীভাঙন, প্রতিরোধে উদ্যোগ নেই

পদ্মা নদীর ভাঙন। ছবি: প্রথম আলো
পদ্মা নদীর ভাঙন। ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর পদ্মা নদীতে আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনে গোদার বাজার এলাকায় ৫০ মিটার ব্লক নদীতে চলে গেছে। এ ছাড়া আরও প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া আরও দুই জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই ভাঙন শুরু হয়। তবে নতুন করে শুরু হওয়া এই ভাঙন রোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এখনো।

ভাঙন তদারকির দায়িত্ব পালনকারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী হাফিজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি পদ্মা নদীতে খননকাজ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, খনন করার ফলে ঢালের নিচের ব্লক সরে গেছে। এতে নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। বুধবার ফরিদপুর প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী জায়গাটি পরিদর্শনে আসবেন।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার বলেন, ‘হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নদীভাঙনের হাত থেকে শহর রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। রাজবাড়ী শহররক্ষা বাঁধ (ফেজ-১) প্রকল্পের আওতায় পদ্মার তীর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২৩টি প্যাকেজের বিপরীতে কাজের মোট মূল্য ধরা হয় ৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। রাজবাড়ী সদর উপজেলায় গোদার বাজার থেকে শুরু করে বোতলা স্লুইসগেট পর্যন্ত ২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার এবং গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ট্যাংরাপাড়া এলাকায় ৪০০ মিটার। সদর উপজেলা তীর সংরক্ষণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। ২০০৯ সালের পদ্মার তীরের ঢাল সংরক্ষণের কাজ শেষ হয়। নির্মাণকাজের মেয়াদ ধরা হয় দুই বছর। কিন্তু কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় দুই কিস্তিতে কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়।

৫০ মিটার নদীর তীর রক্ষার জন্য ৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ১০০ বস্তা বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাজের দায়িত্ব পায় মেসার্স মনোয়ার হোসেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গত ৩০ আগস্ট থেকে বালুভর্তি বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৭ আগস্ট গোদারবাজার ইটভাটার পাশে ৫০ মিটার ভাঙন দেখা দেয়। পরের দিন ভাঙনরোধে পাউবো বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করে। মঙ্গলবার হঠাৎ করে আবার ভাঙন দেখা দিয়েছে। গোদার বাজার ছাড়াও বরাট ইউনিয়নের অন্তারমোড় ও মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। যদিও এসব এলাকায় নদীর পাড় ব্লক দিয়ে বাঁধাই করা হয়নি।