আট দিনের ব্যবধানে আবারও 'খাটের' চালান আটক

কার্টনের ভেতর পলিথিনের সাদা রঙের প্যাকেট থেকে খাট উদ্ধার করা হয়। আজ শনিবার দুপুর দুইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের ফরেন পোস্ট অফিস থেকে নয়টি কার্টনের খাটের চালানটি জব্দ করা হলেও এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি। ছবি : সংগৃহীত
কার্টনের ভেতর পলিথিনের সাদা রঙের প্যাকেট থেকে খাট উদ্ধার করা হয়। আজ শনিবার দুপুর দুইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের ফরেন পোস্ট অফিস থেকে নয়টি কার্টনের খাটের চালানটি জব্দ করা হলেও এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি। ছবি : সংগৃহীত

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাত্র আট দিনের ব্যবধানের নতুন ধরনের মাদক ‘খাট’ বা এনপিএস আটকের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা কাস্টম হাউস ও জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার যৌথ অভিযানে এবার প্রায় ১৬০ কেজি ‘খাট’ আটক করা হয়।


আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের ফরেন পোস্ট অফিস থেকে খাটের চালানটি জব্দ করা হলেও এর সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি।

আট দিন আগে ৩১ আগস্ট দুপুরে শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো এলাকা-সংলগ্ন রানওয়ের পাশে ৪৬৭ কেজি খাটের চালান জব্দ করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নাজিমউদ্দিন (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে নাজিমউদ্দিনের শান্তিনগরের কার্যালয়ে ‘নওশিন এন্টারপ্রাইজ’ থেকে আরও ৩৯৪ কেজি খাট জব্দ করা হয়। ৮৬১ কেজি খাটের চালান বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবার জিয়াদ মুহাম্মদ ইউসুফ নামের এক ব্যক্তি। আজ জব্দ হওয়া খাটের চালানটির রপ্তানিকারক জিয়াদ মুহাম্মদ। তবে আমদানিকারক হিসেবে এশা এন্টারপ্রাইজ, হাউস নম্বর-২৮, রোড-০২, ব্লক-ডি, বাদলদী, তুরাগ, ঢাকা-১২৩০ ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের উপপরিচালক অথেলো চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, জেট এয়ারওয়েজে করে ইথিওপিয়া থেকে ভারত হয়ে কয়েক দিন আগে খাটের চালানটি ঢাকায় আসে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ইউনিটের ফরেন পোস্ট অফিস এলাকা থেকে নয়টি কার্টন জব্দ করা হয়। এসব কার্টনের ভেতর ১৬০ কেজি খাট পাওয়া যায়। পরে এগুলো মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ‘খাট’ অনেকটা চায়ের পাতার গুঁড়োর মতো দেখতে। পানির সঙ্গে মিশিয়ে তরল করে এটি সেবন করা হয়। সেবনের পর মানবদেহে এক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আসক্তিটা অনেকটা ইয়াবার মতো। এক ধরনের গাছ থেকে এই ‘খাট’ বা এনপিএস তৈরি হয়। এটি ‘খ’ ক্যাটাগরির মাদক। আফ্রিকার দেশ জিবুতি, কেনিয়া, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, ইয়েমেনে খাটের গাছ উৎপাদন করা হয়। খাট সেবক করলে অনিদ্রা, অবসাদ, দৃষ্টিভ্রম, ক্ষুধামান্দ্যসহ মানবদেহে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া ইন্দ্রিয় শক্তি এবং যৌনক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি খাট জীবনীশক্তিও কমিয়ে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ১৯৮০ সালে এনপিএসকে মাদকদ্রব্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবার জিয়াদ মুহাম্মদ ইউসুফের নামে খাটের আগের চালানটির রপ্তানি করা হয়। খাটের আরও চালান পাঠানোর ব্যাপারের শুল্ক কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য দেওয়া হয়েছে। আটক হাওয়া খাটের দ্বিতীয় চালানটির আমদানিকারকের নাম-পরিচয় অনুসন্ধানের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুন...