নিশ্চিন্ত আওয়ামী লীগ অপেক্ষায় বিএনপি

আবুল হাসান মাহমুদ আলী,আবুল হাসান মাহমুদ আলী, হাফিজুর রহমান সরকার
আবুল হাসান মাহমুদ আলী,আবুল হাসান মাহমুদ আলী, হাফিজুর রহমান সরকার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিনাজপুর-৪ (খানসামা ও চিরিরবন্দর) আসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর মনোনয়ন নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় নিশ্চিন্তে আছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। তবে এ আসন থেকে বিএনপি ও ২০–দলীয় জোটের প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায় জোটের শরিক দল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা অপেক্ষায় আছেন।
এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ছয়জন, বিএনপি ও ২০-দলীয় জোট থেকে পাঁচজন, জাতীয় পার্টি থেকে দুজন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি থেকে একজন, বাসদ (মার্ক্সবাদী) দল থেকে একজনসহ মোট ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে একজন ও বিএনপি থেকে দুজনসহ মোট নয়জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ আসনে বিএনপি থেকে সাবেক সাংসদ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান মিয়া ও শিল্পপতি জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মো. হাফিজুর রহমানকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, এ আসনে বর্তমান সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ খুব কম থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলেও এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করায় দলীয় নেতা–কর্মীরা তাঁর প্রতি আস্থাশীল।
চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক বলেন, ‘দলে প্রভাব আছে, কাজ করার ক্ষমতা আছে—এমন লোক না হলে এলাকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। সেদিক থেকে আবুল হাসান মাহমুদ আলী একজন যোগ্য লোক। আমরা তাঁর হয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। আশা রাখি, সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ নৌকা প্রতীকে আবার ভোট দেবে।’
দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকার পরেও বিএনপির প্রার্থীরা আসনটি দখলে নিতে জোর প্রচেষ্টা চালাবেন বলে জানিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।
দিনাজপুর-৪ আসনটি বিএনপি-জামায়াত জোটের শক্তিশালী ঘাঁটি শোনা গেলেও বাস্তবে ঠিক তার উল্টো। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৪—এই পাঁচটি জাতীয় নির্বাচনে শুধু ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুর রহমানকে হারিয়ে জয়ী হন বিএনপির আখতারুজ্জামান মিয়া।
বিএনপির অন্যতম প্রার্থী সাবেক সাংসদ আখতারুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘হামলা আর মামলার আতঙ্কে জনসংযোগে মাঠে নামতে পারিনি। এরপরও জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। দল থেকে যেহেতু দুজনকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন দিয়েছে, তাই দলীয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’
এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া অপর প্রার্থী লুসাকা গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং মেঘনা ও ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালক হাফিজুর রহমান সরকার। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন তিনি। ওই নির্বাচনে তিনি ৫০ হাজার ২৭৪ ভোট পেয়েছিলেন। তবে এবার আর স্বতন্ত্র প্রার্থী নয়, দলীয় প্রার্থী হয়েই নির্বাচনে অংশ নিতে চান তিনি। হাফিজুর রহমান সরকার বলেন, ‘দল থেকি যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষেই কাজ করব। তবে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
চিরিরবন্দর ও খানসামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি এলাকায় অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই এ আসনে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিএনপির একজন শক্ত প্রার্থী দরকার।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে দিনাজপুর-৪ আসন। ছয়টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত খানসামা উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৪৮১ জন এবং ১২টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চিরিরবন্দর উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৭ হাজার ২০১ জন।