নারী নেতৃত্ব তৈরিতেই এত আগ্রহ

সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সারি। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা
সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সারি। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বজন ও কর্মীদের নিয়ে সংরক্ষিত নারী আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড় বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে। আওয়ামী লীগের টিকিটে একাদশ জাতীয় সংসদে যেতে আগ্রহী এবার অনেকেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা বলছেন, সচেতনতা ও নারী নেতৃত্ব উঠে আসার জন্যই সংরক্ষিত আসনের চাহিদা বাড়ছে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে দলের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ফরম বিক্রির উদ্বোধন করেন।

ধানমন্ডি কার্যালয়ের দুই ভবনে চারটি করে মোট আটটি বিভাগের ফরম বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মনোনয়নপ্রত্যাশীরা লাইনে দাঁড়িয়ে ফরম কেনেন। যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার সকালেই ফরম কেনা শেষে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নারীরা সচেতন হচ্ছে। তৃণমূলে নারীদের রাজনীতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বাড়ছে। তাই প্রতিযোগিতা বেশি। এখান থেকেই নারী নেতৃত্ব তৈরি হবে।’

সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড়। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা
সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ভিড়। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা

এর আগে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সাংসদ নাজমা আক্তার জানান, যাঁরা আন্দোলন-সংগ্রাম ও বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদেরই মনোনীত করবেন।

আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ৪৫ বছর ধরে যুক্ত মৌলভীবাজারের হোসনে আরা। ১৯৯৬ সালে তিনি সংরক্ষিত আসনের সাংসদ ছিলেন। মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের এই সহসভাপতি বলেন, দিন দিন রাজনীতিতে নারীরা আগ্রহী হচ্ছেন। আগের চেয়ে এখন অনেক প্রার্থী।

মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাড়াও অনেকে প্রার্থীর পক্ষে ফরম সংগ্রহ করতে এসেছেন। তবে যেসব প্রার্থী সরাসরি সংগ্রহ করতে এসেছেন, তাঁদের আগে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি ফরমের মূল্য ৩০ হাজার টাকা। ফরম সংগ্রহ করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সঙ্গে রাজনৈতিক পরিচয় যুক্ত করে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা
সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ধানমন্ডি, ঢাকা, ১৫ জানুয়ারি। ছবি: হাসান রাজা

ফরম সংগ্রহ করতে আসা বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এ ছাড়া তারকাদের মধ্যে চিত্রনায়িকা কবরী সারোয়ারও যান ফরম নিতে। সবারই প্রত্যাশা, দলের সভানেত্রী যোগ্যতা ও কাজ অনুযায়ী মনোনয়ন দেবেন। মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভানেত্রী বনশ্রী বিশ্বাস ১৯৯৬ সাল থেকে সংরক্ষিত আসনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। তবে এবার তিনি আত্মবিশ্বাসী নেত্রীর মনোনয়ন পাবেন। তিনি বলেন, ‘নেত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সহযোগী হয়ে কাজ করতে চাই।’

দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক লতিফা বেগম প্রায় ২৫ বছর রাজনীতি করছেন। তিনি বলেন, ‘নারীরা এখন পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন পেশার পাশাপাশি রাজনীতিতেও তারা আসতে চান।’

নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ৪৩ টি, জাতীয় পার্টি ৪ টি, বিএনপি ১ টি, ওয়ার্কার্স পার্টি ১টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জোটভুক্ত হয়ে ১টি আসন পাবে।

আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিঠি দিয়ে জানতে চাইবে, তারা একক, নাকি জোটগতভাবে নির্বাচন করবে। দলগুলোকে এ বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত ৩০ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। এরপর ইসি ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিলে মনোনয়নপত্র দাখিল, মনোনয়নপত্র বাছাই ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় জানানো হবে।