নালা নয়, যেন ভাগাড়

দেখে মনে হচ্ছে ভাগাড়। আসলে তা নয়, এটি নালা। এর ওপর ময়লা ফেলে এ অবস্থা করা হয়েছে। গত শনিবার কুমিল্লা শহরতলির দৌলতপুর ছায়াবিতান এলাকায়।  প্রথম আলো
দেখে মনে হচ্ছে ভাগাড়। আসলে তা নয়, এটি নালা। এর ওপর ময়লা ফেলে এ অবস্থা করা হয়েছে। গত শনিবার কুমিল্লা শহরতলির দৌলতপুর ছায়াবিতান এলাকায়। প্রথম আলো

কুমিল্লার শহরতলির দৌলতপুর ছায়াবিতান এলাকার বড় নালাটি গত দুই বছরেও পরিষ্কার না করার কারণে আবর্জনায় ভরে আছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেও পানি নামতে না পারার কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। ফলে এলাকার লোকজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এলাকার লোকজন বলছেন, আসছে বর্ষা মৌসুমের আগে নালা পরিষ্কার করা না হলে এলাকায় জলাবদ্ধতা আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।

৬ মার্চ সরকারি কর্মকর্তাদের সংগঠন দৌলতপুর ছায়াবিতান কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা প্রশাসকের কাছে নালাটি পরিষ্কারের আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শহিদুল ইসলাম বলেন, অপ্রধান সব নালার পানি গিয়ে পড়ে ওই নালার মধ্যে। শহরতলির গুরুত্বপূর্ণ এই নালা আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই দ্রুত পরিষ্কার করার জন্য মেয়র ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, নগরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকতলা, বিসিক শিল্পনগরী, ঠাকুরপাড়া এলাকা ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার পানি দৌলতপুর ছায়াবিতান ও ধর্মপুর এলাকার বড় নালাটি দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত দুই বছর ধরে নালাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে না। এ কারণে এতে ময়লা-আবর্জনা জমে আছে। নালার মধ্যে এখন পলিথিন, প্লাস্টিকের সামগ্রী, কাগজ, বস্তার স্তূপ জমেছে। পচা পানির দুর্গন্ধে টেকা যাচ্ছে না। এর ওপর কুকুর নালার মধ্যে নেমে ময়লা নিয়ে টানাটানি করে। এক সপ্তাহ আগের টানা বৃষ্টিতে নালার পানি ও ময়লা উপচে মানুষের বাড়িঘরের সামনে চলে যায়। এলাকাবাসীর দাবি, শিগগিরই ময়লা-আবর্জনা নালা থেকে অপসারণ করা না হলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে। নালার ময়লার কারণে পানির প্রবাহ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, কুমিল্লা নগরের পানি নামার বেশির ভাগ পথ ও নালা রুদ্ধ হওয়ার পথে। মানুষ বাড়িঘরসহ নানা ধরনের স্থাপনা ও বসতি করার কারণে পানি নামতে পারছে না। এর ওপর জনগণ নালার মধ্যে ময়লা–আবর্জনা ফেলছে। শহরতলির দৌলতপুর ছায়াবিতান এলাকার পাশে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন। আগে রেললাইনের নিচের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে পানি নামত। এখন পানি নামার অনেক পথ বন্ধ করা হয়েছে। এগুলো উন্মুক্ত করা না হলে জলাবদ্ধতা হবেই। এ জন্য জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা রাখতে হবে।

জানতে চাইলে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, কুমিল্লা নগরের সব নালার ময়লা অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগেই পর্যায়ক্রমে সব নালা পরিষ্কার করা হবে। তখন আর জনদুর্ভোগ থাকবে না।