ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে মোংলা বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ

১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের মাঝেই উপকূলের বলেশ্বর নদে মাছ ধরছেন জেলেরা। রায়েন্দা নতুন লঞ্চ ঘাট, শরণখোলা, বাগেরহাট। ছবি: প্রথম আলো
১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেতের মাঝেই উপকূলের বলেশ্বর নদে মাছ ধরছেন জেলেরা। রায়েন্দা নতুন লঞ্চ ঘাট, শরণখোলা, বাগেরহাট। ছবি: প্রথম আলো

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আঘাত হানার শঙ্কায় বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত জারি করার পর বন্দরে অবস্থানরত সব জাহাজ ও জেটিতে পণ্য ওঠা-নামার কাজসহ সব রকমের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দীন বলেন, আবহাওয়া অফিস থেকে গতকাল শুক্রবার রাত পর্যন্ত মোংলা বন্দরে ৭ নম্বর সংকেত বলবৎ ছিল। এরপর সকালে তা বাড়িয়ে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত জারি করা হয়। তখন বন্দরে অবস্থানরত ক্লিংকার (সিমেন্টের কাঁচামাল), মেশিনারি, গ্যাস ও স্লাগসহ ১৩টি বাণিজ্যিক জাহাজে পণ্য ওঠা-নামার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারির পর বন্দরের অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচলও বন্ধ করা হয়। বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য বোঝাই করার জন্য যেসব লাইটার জাহাজ নদীতে আছে, তাদেরও নিরাপদে নোঙর করতে বলা হয়েছে। তিনটি উদ্ধারকারী নৌযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত জারির পর থেকে পৌর এলাকার প্রত্যেক ওয়ার্ডে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাত হানার আশঙ্কা ও পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাহিদুজ্জামান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকেরা ইতিমধ্যে মাঠে তাদের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষ উঠছে। আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, বনপ্রহরীদের ব্যবহৃত অস্ত্র-গুলি নিয়ে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে এবং সুন্দরবনের আলোর কোলসহ অন্যান্য চরে যেসব জেলেরা শুঁটকি মাছ সংগ্রহে গিয়েছিলেন, তাদের গতকালই নিরাপদ আশ্রয়ে এনে রাখা হয়েছে। ১০ থেকে ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় রাস উৎসব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের বনে প্রবেশ করতে মানা করা হয়েছে। যারা এখনো বিভিন্ন নৌযানে করে বনের ভেতরে অবস্থান করছে তাদেরও নিরাপদে সরিয়ে নিতে বনপ্রহরীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।