বায়ুদূষণ থেকে উত্তরণে সরকারের কিছু উদ্যোগ

ধুলায় আচ্ছন্ন চারদিক। ভোগান্তিতে পথাচারীরা। পোস্তগোলা এলাকা, ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি। ফাইল ছবি
ধুলায় আচ্ছন্ন চারদিক। ভোগান্তিতে পথাচারীরা। পোস্তগোলা এলাকা, ঢাকা, ২৪ জানুয়ারি। ফাইল ছবি

কয়েক দিনের মতো আজ সোমবারও দিনের বেশির ভাগ সময় জুড়ে ঢাকা বিশ্বের দূষিত বায়ুর শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে ছিল। এর মাঝে দুই-একবার ভারতের দিল্লি ও কলকাতা এবং মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর শীর্ষে উঠে এসেছিল। এই পরিস্থিতিতে ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচিবালয়ে এক জরুরি আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য বেশকটি উদ্যোগের কথা জানানো হয়।

সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকার বায়ুর মান দিনকে দিন খারাপ হচ্ছে। কয়েক মাস আগেও ঢাকা বায়ু দূষণের দিক থেকে তিন ও চার নম্বরে ছিল। কিন্তু গত তিন-চার দিন ধরে ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর হয়ে উঠেছে।

এই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য বেশকটি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইটভাটায় যাতে দূষণকারী পদার্থ বের না হয় তা নিশ্চিত করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনকে প্রতিদিন সকাল ও দুপুরে দুই বার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পানি ছিটাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) এবং মেট্রোরেল প্রকল্পকেও নিজস্ব উদ্যোগে পানি ছিটানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান, ইট, বালু, মাটিসহ নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনকারী ট্রাক বা গাড়িগুলো যাতে অবশ্যই ঢেকে মালামাল পরিবহন করে তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনকে পরিত্যক্ত বর্জ্য না পোড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া ব্যবস্থা সম্পর্কে জানাতে গিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বলেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট, পল্টন মোড়, কদম ফোয়ারা, শিক্ষাভবন মোড় হয়ে জিরো পয়েন্ট এলাকাকে নীরব জোন বা শব্দ বিহীন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এ এলাকায় কোনো পরিবহনকে কোনো প্রকার হর্ন বাজাতে বা শব্দ সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। ঢাকা শহরে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাইলট কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এটা বাস্তবায়ন করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে হাইড্রোলিক হর্ন পুরোপুরি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শহরে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় শব্দের উৎস সন্ধান করে তা বন্ধ করা হবে।