নালিতাবাড়ীতে সুতার ফাঁদ পেতে পাখি শিকার

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সুতার ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় সুতার ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করা হচ্ছে। ছবি: প্রথম আলো

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় এক সপ্তাহ ধরে সুতার ফাঁদ পেতে বিভিন্ন পাখি শিকার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাখি শিকার বন্ধে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমানকে জানানো হয়েছে।

গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় আমন মৌসুমের ধান কাটার কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। চাষিরা সেই খেতে বোরো আবাদের প্রস্তুতির জন্য পানি তুলছেন। খেত ভিজে যাওয়ায় খেতের মাটির নিচে থাকা পোকামাকড় বের হয়ে আসে। সেই পোকামাকড় ধরতে অতিথি পাখিসহ স্থানীয় জাতের বিভিন্ন পাখি খেতে আসে। এলাকার কিছু মানুষ সেই সুযোগে খেতে সুতার ফাঁদ পেতে রাখেন। পাখি খেতে নামলেই সুতার ফাঁদের আটকা পড়ে। পরে সুতা টেনে সেই পাখি নিয়ে যান তাঁরা। এভাবে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পাখি শিকার করা হচ্ছে।

এক সপ্তাহ ধরে উপজেলার মরিচপুরান ইউনিয়নের চৌরাস্তা বাজার, মধ্যপাড়া, পূর্বপাড়া, ফকিরপাড়া, কোন্ননগর, রাবারড্যাম, গোবিন্দনগর, দোগাংগাপাড়, যোগানিয়া, বাইটকামারি, বাল্লাকান্দা; কলসপাড় ইউনিয়নের নাকশী, বালুঘাটা; বাঘবেড় ইউনিয়নের রানিগাঁও; রূপনারায়ণকুড়া ইউনিয়নের বাশকান্দা, গোজাকুড়া, মাথাফাটা বাজার এলাকায় সুতার ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করা হচ্ছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

মরিচপুরান ফকিরপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আজিমদ্দিন বলেন, খেত ভেজাতে চাষিরা পানি তুলছেন। এ সময় খেতে থাকা পোকামাকড় বের হয়ে আসে। আর এই পোকামাকড় ধরতে অতিথি পাখিসহ নানা পাখি খেতে নামে। এলাকার ছেলেরা সুতা দিয়ে খেতে ফাঁদ তৈরি করে রাখে। পাখি খেতে নামলেই ফাঁদে ধরা পরে। প্রতিদিন শত শত পাখি শিকার করা হচ্ছে। নিষেধ করলেও কেউ তা শুনছে না।

পাখি শিকার বন্ধে উদ্যোগ নিতে গতকাল মরিপুরান এলাকার লোকজন ইউএনও আরিফুর রহমানকে অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। পাখি ধরা সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ যদি পাখি শিকার করেন তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফ ইকবাল বলেন, পাখি রক্ষায় সবারই এগিয়ে আসা প্রয়োজন। গত বছর অভিযোগ পেয়ে এলাকায় গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে মরিচপুরান এলাকায় কৃষি কার্যালয়ের উদ্যোগে মাইকিং করা হয়েছিল। দ্রুত পাখি শিকার বন্ধে ইউনিয়ন পর্যায়ে সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ নিতে বলা হবে।