খননযন্ত্রের চালক মেয়র নাছির, নতুন খালের উদ্বোধন

খননযন্ত্রের (এক্সকেভেটর) চালকের আসনে বসে নতুন খাল খননের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। চট্টগ্রাম, ২৮ জানুয়ারি। ছবি: সৌরভ দাশ
খননযন্ত্রের (এক্সকেভেটর) চালকের আসনে বসে নতুন খাল খননের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। চট্টগ্রাম, ২৮ জানুয়ারি। ছবি: সৌরভ দাশ

খননযন্ত্রের (এক্সকেভেটর) চালকের আসনে বসে আছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি সেই আসনে বসেই নতুন খাল খননের উদ্বোধন করলেন। বর্তমান মেয়রের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে এই কাজ শুরু করল সিটি করপোরেশন।

আগের মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের সময়ে অনুমোদন পাওয়া এই খাল খননের কথা ছিল সাড়ে পাঁচ বছর আগে। আগে খনন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি টাকা। এখন খাল কাটতে লাগবে এক হাজার ২৫৬ কোটি টাকা।

নতুন খাল খনন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের পূর্ব বাকলিয়ার ওয়াইজর পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান হয়। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই খালের বহদ্দারহাটের বারইপাড়া অংশ থেকে শুরু হওয়া এই খাল বলির হাট হয়ে কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশবে।

চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা দুর্ভোগ সহনীয় করতে ২০১৪ সালের জুনে ‘বহদ্দারহাট বারইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত নতুন খাল খনন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত।

তবে সরকারি বরাদ্দ ও ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজই শুরু করতে পারেনি সিটি করপোরেশন। এখন মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত।

আজ খননযন্ত্র থেকে নেমে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি বলেন, নির্ধারিত মেয়াদে খাল খননের কাজ শেষ হবে না। কারণ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য পাঁচটি লট করা হয়েছে। এখনো তিনটি লটে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না পাওয়ায় ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়নি। তবে ২০২১ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মেয়র।

ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় দেড় গুণের পরিবর্তে তিন গুণ হওয়ায় প্রকল্প ব্যয় বেড়েছে বলে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন জানান। তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রণীত মহাপরিকল্পনায় এই খাল খননের সুপারিশ করা হয়েছিল।

সাংবাদিকদের মেয়র বলেন, ‘প্রথম দফায় না হওয়ার পর আমরা সার্ভে করেছিলাম আদৌ এই প্রকল্পের প্রয়োজন রয়েছে কি না। একেক জনের মত একেক রকম। প্রয়োজন নিয়ে আমরা দ্বিধায় ছিলাম। মন্ত্রণালয়ে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিই, এই এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এই প্রকল্পের প্রয়োজন আছে। তাই প্রকল্প সংশোধন করা হয়।’

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই খাল খননের জন্য ২৫ দশমিক ১৬ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এ জন্য খরচ হবে এক হাজার ১০৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। নতুন খালের প্রশস্ততা হবে ৬৫ ফুট। এর দুই পাশে নতুন রাস্তা নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি রাস্তার প্রশস্ততা হবে ২০ ফুট করে। এ ছাড়া দুই পাশে ৬ ফুট করে হাঁটাপথ (ওয়াকওয়ে) থাকবে। খাল খনন ও রাস্তা নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁদের চার মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়।

শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জোবাইরা নার্গিস খান, কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ ও এম আশরাফুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল সোহেল আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।