পাখির জন্য ভালোবাসা

হাওরের পাশ ঘেঁষে হিজল, করচ আর বরুণগাছে ভরা বাড়ি। পাখিবাড়ি নামেই পরিচিত। সন্ধ্যা নামার আগেই ঝাঁকে ঝাঁকে নানা প্রজাতির পাখি সেখানে আশ্রয় নেয়। ভোর হলে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। এ দৃশ্য নিত্যদিনের।

বাড়িটির মালিক স্কুলশিক্ষক মনোহর আলী। তিনি বেঁচে নেই। পাখিদের এ আবাসস্থল তাঁর জীবদ্দশাতেই গড়ে ওঠে। এখন তাঁর সন্তানদের একজন বাড়ির দেখভাল করছেন। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হাল্লা গ্রামে হাকালুকি হাওরপাড়ে পাখির এ অভয়াশ্রমটি।

তিন একর জায়গা জুড়ে সুনসান বাড়ি। ভেতরে পাকা একটি বসতঘর। পাখিরা তখনো ফেরেনি। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকেরা বাড়ির বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। সন্ধ্যার আগমুহূর্তে পাখিরা আসা শুরু করে। কানিবক, নিশিবক, পানকৌড়ি, শালিক, ঘুঘুসহ নানা প্রজাতির দেশি পাখি। বাড়ির উঠান-গাছ পাখির বিষ্ঠায় ভরা। আশপাশে এ রকম আরও বাড়ি আছে। তবে সেখানে পাখিদের দেখা মেলেনি।

মনোহর আলীর ছয় ছেলের মধ্যে তিনজন প্রবাসী। একজন সিলেট নগরে ব্যবসা ও আরেকজন ঢাকায় লেখাপড়া করছেন। চতুর্থ ছেলে শাহরিয়ার আহমদ থাকেন বাড়িতে।

হাওরের পাশ ঘেঁষে হিজল, করচের গাছে পাখিদের বাড়ি।  ছবি: প্রথম আলো
হাওরের পাশ ঘেঁষে হিজল, করচের গাছে পাখিদের বাড়ি। ছবি: প্রথম আলো

শাহরিয়ার জানালেন, তাঁদের বাবা উপজেলা সদরে অবস্থিত পাথারিয়া-ছোটলেখা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। ২০০৯ সালে মারা গেছেন। তাঁদের বাড়িতে অনেক আগে থেকেই পাখিরা থাকে। তাঁদের বাবা পাখিদের খুব আদর করতেন। বাড়ির উঠানে খাবার ছিটিয়ে দিতেন। গাছ বা গাছের ডালপালা কাটতেন না। অন্য কাউকে কাটতেও বারণ করতেন।

শাহরিয়ার বললেন, মাঝেমধ্যে শিকারিরা হানা দেয়। লুকিয়ে পাখি মেরে নিয়ে যায়। মাঝেমধ্যে ধরাও পড়ে।