গুজব বর্জন নিশ্চিত করুন, মসজিদ কমিটিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন

করোনা ভাইরাস নিয়ে গুজব সৃষ্টি না করা বা গুজব ‘সর্বতোভাবে বর্জন’ নিশ্চিত করার জন্য খতিব, ইমাম ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। আজ সোমবার আগারগাঁওয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

একই সঙ্গে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির কাফন, জানাজা ও দাফন যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে করার জন্য সহযোগিতা করার আহ্বানও জানানো হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিস মাহমুদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা উল্লেখ করা হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোগ ও ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য সতর্কতা অবলম্বন ইসলামের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এটা নবীজি (সা.)-এর সুন্নত। মসজিদে নিয়মিত আজান, একামত, জামাত ও জুমার নামাজ অব্যাহত থাকবে। তবে জুমা ও জামাতে মুসল্লিদের অংশগ্রহণ সীমিত থাকবে। যাঁরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা যাঁদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে, আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন এবং তাঁদের সংস্পর্শে গেছেন, যাঁরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বা বয়োবৃদ্ধ, দুর্বল, মহিলা ও শিশু, যাঁরা অসুস্থ মানুষের সেবায় নিয়োজিত এবং যাঁরা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন, তাঁদেরও মসজিদে না আসার অবকাশ আছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, যাঁরা জুমা ও জামাতে যাবেন, তাঁরা সবাই সুরক্ষা ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন। অজু করে নিজ নিজ ঘরে সুন্নত ও নফল আদায় করবেন। শুধু জামাতের সময় মসজিদে যাবেন এবং ফরজ নামাজ শেষে দ্রুত ঘরে চলে আসবেন। সাবান দিয়ে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, জীবাণুনাশক দ্বারা মসজিদ ও ঘরের মেঝে পরিষ্কার রাখাসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সব নির্দেশনা মেনে চলবেন। হঠাৎ হাঁচি-কাশি এসে গেলে টিস্যু বা বাহু দিয়ে মুখ ঢেকে রাখবেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং কার্পেট-কাপড় সরিয়ে ফেলতে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া জামাত, জুমার বয়ান, খুতবা ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা, দরসে হাদিস, তফসির ও তালিম স্থগিত রাখা, অজুখানায় সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখা, জামাতের কাতারে ফাঁক ফাঁক হয়ে দাঁড়ানো এবং ইশরাক, তিলাওয়াত, জিকির ও অন্যান্য আমল ঘরে করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।

এ ছাড়া, সংকটের সময় আল্লাহর রহমত লাভের উদ্দেশ্যে দুস্থ ও অসহায় মানুষকে বেশি বেশি দান-সাদকা করা ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে খাদ্যপণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের মধ্যে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম ফরীদ উদ্দিন মাসউদ, জামেয়া ইসলামিয়া দারুল উলুমের মুহতামিম মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, শায়খ যাকারিয়া (র.) ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক মুফতি মীযানুর রহমান সাঈদ, জাতীয় মুফতি বোর্ডের সদস্যসচিব মুফতি মো. নূরুল আমীন, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. আল্লামা কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী, জামেয়া রহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হক, চরমোনাই কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী প্রমুখ অংশ নেন। এ ছাড়া হাইয়াতুল উলয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আহমদ শফিসহ আরও বেশ কিছু আলেমের ই-মেইলে পাঠানো মতামত বৈঠকে আলোচনা করা হয়।