সেই তমার পাশে দাঁড়ালেন রাজশাহীর মেয়র

নিমকি বিক্রি বন্ধ। দুই সন্তানকে নিয়ে নিজের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে কাঁদছেন তমা রানী পাল। ছবি: প্রথম আলো
নিমকি বিক্রি বন্ধ। দুই সন্তানকে নিয়ে নিজের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে কাঁদছেন তমা রানী পাল। ছবি: প্রথম আলো

মাদকাসক্ত স্বামী জেলে যাওয়ার পর দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে জীবনের কঠিন লড়াইয়ে নেমেছিলেন তমা রানী পাল। নিমকি তৈরি করে বাজারে বিক্রি শুরু করেছিলেন। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তাঁর জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। এ নিয়ে গত শুক্রবার প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এগিয়ে আসেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান।

রাজশাহীর মেয়র পরের দিন শনিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর পালের মাধ্যমে তমার হাতে ১০ কেজি চাল, ৪ কেজি আলু, ২ কেজি ডাল ও নগদ তিন হাজার টাকা পৌঁছে দেন। এই সহযোগিতা পেয়ে তমা মেয়রকে ধন্যবাদ জানান।

শুক্রবার সংবাদটি অনলাইনে প্রকাশিত হওয়ার পর কানাডা থেকে একজন প্রবাসী তমার কাছে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এ ছাড়া আরও দুজন তিন হাজার টাকার মতো পাঠান।

তমার মায়ের বাড়ি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কুমারপাড়া মহল্লায়। এখানে মা সুবাশী রানী দাস ছাড়া আর কেউ নেই। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।

বছর দশেক আগে তমার বিয়ে হয়েছিল রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর এলাকার তন্ময় পালের সঙ্গে। তমা জানতেন, তাঁর স্বামী চটপটি বিক্রি করেন। বিয়ের পরে দেখেন, তাঁর স্বামীকে শুধু পুলিশ খোঁজে আর পেলে ধরে নিয়ে যায়। তমা জানতে পারেন যে তাঁর স্বামীর নামে ঢাকা, নাটোর ও রাজশাহীতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা আছে। তিনি মাদকসেবী। বিয়ের পরই সংসার চালাতে তমাকে ঝালমুড়ি বিক্রি করতে হতো। স্বামীর নির্যাতনের কারণে অনেকবার মায়ের কাছে চলে এসেছেন। তবে পাঁচ মাস আগে মাদকাসক্ত স্বামীকে কারাগারে নিলে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে চলে যান। ঠিক করেন, স্বামীর সংসারে আর ফিরে যাবেন না। তাঁর ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে আর মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের নগরের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দিয়েছেন তিনি।

সেই থেকে তমা নিমকি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছিলেন। করোনা দুর্যোগে নিমকির ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি।