মে মাসজুড়ে কালবৈশাখী, দাবদাহ, শিলাবৃষ্টি...

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে যত ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বছরজুড়ে আসে, চলতি মে মাসে এর প্রায় সবই দেখা যেতে পারে। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি, দাবদাহ ও কালবৈশাখী—সবই এ মাসে বাংলাদেশের ওপর বয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের চলতি মাসের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এসব কথা বলা হয়েছে।

সোমবার সংস্থাটি থেকে প্রকাশিত এই পূর্বাভাস প্রতিবেদনে গত এপ্রিলে দেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এর সঙ্গে স্বাভাবিক আবহাওয়ার তুলনা করা হয়েছে। ওই বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এপ্রিলে দেশে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে রাজধানীতে স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়েছে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেশি হয়েছে। মূলত পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী বায়ুর সংযোগ হওয়ায় এপ্রিলে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও বেশি ছিল। এতে বৃষ্টি বেশি হয়েছে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরের অদূরে আন্দামান সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ সৃষ্টি হয়ে এ মাসের শুরুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে। গত মাসের শেষের দিকে এমন পূর্বাভাস দিয়েছিল ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি এখন পর্যন্ত তৈরি হয়নি। তবে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আজ সোমবার দেওয়া এক নতুন পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হতে আরও সপ্তাহ খানেক লেগে যাবে। এরই মধ্যে আন্দামান সাগরের কাছে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেটি শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় হয়ে ১২ থেকে ১৪ মের মধ্যে মিয়ানমারে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশেও এর প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। বয়ে যেতে পারে দমকা হাওয়া। একই সঙ্গে ওই সময় ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা আছে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি। লঘুচাপটি সৃষ্টির স্থানটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার দূরে। এর প্রভাব এখনো বঙ্গোপসাগরে আসেনি। প্রভাব না থাকলে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে কোনো পূর্বাভাস ও বিশ্লেষণ দেওয়া হয় না। তাই আন্দামান সাগরের ওই লঘুচাপ নিয়ে তারা কোনো বিশ্লেষণ দেয়নি।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্দামান সাগরের লঘুচাপটি এখনো অপরিণত অবস্থায় আছে। সেটি আদৌ আরও শক্তি অর্জন করে নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কি না, এ নিয়েই অনিশ্চয়তা রয়েছে। তা হলেও বাংলাদেশের ওপর আদৌ এর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, এটিও নিশ্চিত নয়। তাই আমরা এ ব্যাপারে কোনো পূর্বাভাস দিচ্ছি না।’

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে কমপক্ষে দুটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এ ছাড়া তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী, দুই থেকে তিনটি তাপদাহ, একবার হঠাৎ বন্যা ও মাসজুড়ে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।