পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। সমিতির গঠনতন্ত্র ও কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসারে অবিলম্বে একটি নির্বাচন উপকমিটি গঠন করে এই নির্বাচনের জানিয়েছে তারা।
একইসঙ্গে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার ঘটনায় আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করেছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের ব্যানারে আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা এই দাবি জানান।
সর্বজনীন নির্বাচন উপকমিটি গঠন করে সমিতির (২০২৩-২৪) কার্যকরী কমিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর পুলিশের নির্যাতন এবং আইনজীবী নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল হতে সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘নির্বাচন ঘিরে আইনজীবীদের পাশাপাশি দেশের সাধারণ মানুষেরও ব্যাপক আগ্রহ ছিল। কিন্তু আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে লক্ষ করেছি যে দেশের অন্য সব নির্বাচনের মতো দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সমিতির নির্বাচনেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের যে রাজনৈতিক চরিত্র, তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আইনগতভাবে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলেও নির্বাচনের নাটক সাজিয়ে একতরফাভাবে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও একই ধরনের প্রহসনের নির্বাচন করা হয়েছে।’
বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ঘিরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কতিপয় অত্যুৎসাহী আইনজীবী ও পুলিশের নারকীয় তাণ্ডব আইনজীবী হিসেবে সমাজের কাছে আমাদের হেয় করেছে। এটা শুধু আইনজীবী সমাজেরই নয়, পুরো জাতির জন্যই কলঙ্কজনক।’
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘সভাপতি ও সম্পাদক পদপ্রার্থী একাধিকবার প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়া পুলিশের তাণ্ডবে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের আহত হওয়ার বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করেন। এরপরও একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা সম্ভবপর হয়নি। পুলিশি তাণ্ডবের কোনো দৃশ্যমান প্রতিকার হয়নি। আমাদের দুঃখ, আইনজীবীদের একটি সমিতির নির্বাচনেও পুলিশকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের নিজেদের প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণা করতে হয়! এটা বড় লজ্জার বিষয়।’
লিখিত বক্তব্যের শেষাংশে বলা হয়, ‘অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে কার্যকরী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক অবিলম্বে একটি নির্বাচন সাব–কমিটি গঠন করে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জোর দাবি জানাচ্ছি। আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর ন্যক্কারজনক পুলিশি হামলার নির্দেশদাতা আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের পদত্যাগ দাবি করছি।’
এই নির্বাচনের আইনগত কোনো বৈধতা নেই দাবি করে সভাপতি প্রার্থী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার তদন্ত-বিচার না হবে এবং পুনরায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সাধারণ আইনজীবীদের নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, মহাসচিব কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন।