নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাকারী দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

এক মামলায় আগাম জামিনপ্রাপ্ত আসামি আটকের ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাকারী দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এই সিদ্ধান্ত দেন। একই সঙ্গে আদেশের বিষয়টি দুই সপ্তাহের জন্য (আগামী ১৩ আগস্ট) মুলতবি রাখা হয়েছে।

দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন—পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান।

‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার, আদালতে মুক্তি’ শিরোনামে গত ২০ মে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। পরদিন প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনেন উচ্চ আদালতে আসামিপক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা।

আরও পড়ুন

২১ মে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ব্যাখ্যা জানাতে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুরকে গত ১৮ জুন আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন। ধার্য তারিখে (১৮ জুন) তাঁরা হাজিন হন। এর ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহেও তাঁরা আদালতে হাজির হন। এই ঘটনার জন্য তাঁরা ২৪ জুলাই লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেদিন আদালত ৩০ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। আজও দুই পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে হাজির হন।

আরও পড়ুন

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা শুনানিতে অংশ নেন। দুই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।

শুনানিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তার আইনজীবী কাইয়ুম খান বলেন, গত তারিখে তাঁরা (ওসি মনিরুজ্জামান ও এএসআই মিজানুর) নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদেশের জন্য রয়েছে।

দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ বিভাগীয় তদন্ত করে দেখার জন্য আদেশ দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন আদালত। তখন দুই পুলিশ কর্মকর্তার আইনজীবী কাইয়ুম খান বলেন, কোন বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত।

দুটি দিক তুলে ধরে তখন আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আপনাদের কোনো বক্তব্য আছে কি না, তা দেখেন। আগামী রোববার আদেশের জন্য রাখছি।’

তখন পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনজীবী দুই সপ্তাহ সময়ের আরজি জানান।

আরও পড়ুন

দুই সপ্তাহের জন্য বিষয়টি মুলতবি রেখে আদালত পুলিশ কর্মকর্তাদের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, তাঁদের (দুই পুলিশ কর্মকর্তা) ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিচ্ছেন। আদেশের দিন তাঁদের আসতে হবে না।

পরে আইনজীবী কাইয়ুম খান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আদেশের বিষয়টি দুই সপ্তাহের জন্য মুলতবি করেছেন। এ হিসেবে দুই সপ্তাহ পরে, অর্থাৎ বিষয়টি ১৩ আগস্ট আদেশের জন্য আসবে।

২০ মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পটুয়াখালী সদর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়া কলেজশিক্ষার্থী মো. আশ্রাফুল হাওলাদারকে আটক করে আদালতে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। ১৮ মে আসামির বাড়ি থেকে আটকের পর ১৯ মে সকালে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনসংক্রান্ত কপি দেখালে তা আমলে নেয়নি বলে দাবি আসামির পরিবারের।পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে ১৯ মে আসামিকে ছেড়ে দেন পটুয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট।