বাংলাদেশে পরিশোধিত ডিজেল রপ্তানি করতে চায় ভারত

বাংলাদেশের কাছে পরিশোধিত ডিজেল রপ্তানি করতে চায় ভারত। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভারতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা আসতে পারে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে ‘বিবিআইএন’ (বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল, ভারত) মোটরযান চুক্তির দ্রুত বাস্তবায়নে বাংলাদেশ জোর দেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ভারতও চাইছে এটি দ্রুত চালু হোক। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে ভারত পশ্চিমবঙ্গের হিলি থেকে বাংলাদেশ হয়ে মেঘালয়ের মেহেন্দ্রগঞ্জ পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা চাইবে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির সময় রেলে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে সরবরাহ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন রাখা নিশ্চিত করেছিল ভারত। এরই ধারাবাহিকতায় ভারত প্রস্তাব দিয়েছে চাল, গম, পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় যে সব পণ্য বাংলাদেশ আমদানি করে, তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আগাম জানাতে।

বাংলাদেশ নিজের চাহিদার কথা জানালে ভারত আগে থেকে সেটি বিবেচনায় নেবে। ফলে ভারত নিজের চাহিদা মেটানোর পর বাংলাদেশের চাহিদার বিষয়টিও মাথায় রাখবে। এতে করে বাংলাদেশের প্রয়োজনের সময় ভারত ওই পণ্যগুলোর জোগান নিশ্চিত করার চেষ্টা করবে। দুই দেশের শীর্ষ নেতার আলোচনায় বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারত ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (চেপা)’ সইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য দুই দেশই চুক্তি শুরুর বিষয়ে আলোচনা করতে চায়। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনা শেষে এ বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এবারের ভারত-বাংলাদেশের শীর্ষ বৈঠকে প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হবে। সেখানে ঋণচুক্তির আওতায় ভারতের দেওয়া ৫০ কোটি ডলার ব্যবহারের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর জন্য যান কেনার তালিকা চূড়ান্ত করার প্রসঙ্গটি আসতে পারে। এর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এগিয়ে নিতে ভবিষ্যতে যৌথভাবে সমরাস্ত্র উৎপাদনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা নিয়ে আলোচনার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন

জানতে চাইলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের নেইবারহুড স্টাডিজের সেন্টারের হেড ও জ্যেষ্ঠ ফেলো শ্রীরাধা দত্ত সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন কোনো ইস্যু নেই যেখানে বাংলাদেশ ও ভারত একসঙ্গে কাজ করছে না। দুই দেশের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, যেটা আগে ভাবা যেতো না।

এরপরও বলতে দ্বিধা নেই, নানা বিষয়ে আমাদের মতবিরোধ আছে। তবে বাংলাদেশ যেভাবে ভারতের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ দূর করতে দুহাত বাড়িয়ে দিয়েছে, এই সহায়তা না পেলে যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি সেটা সম্ভব হতো না।’