দুই মেয়র দুই বছরে কতটা কথা রাখলেন

আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস
ফাইল ছবি

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও ঢাকা উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এই মাসের মাঝামাঝিতে দায়িত্ব পালনের দুই বছর পার করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার আগে দুই মেয়রই গালভরা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে জলাবদ্ধতা নিরসন, যানজট নিয়ন্ত্রণ, গণপরিবহনের সুব্যবস্থা, নারীবান্ধব গণপরিবহন, সুন্দর ঢাকা—এসব প্রতিশ্রুতির বেশির ভাগেরই বাস্তবায়ন দেখতে পায়নি রাজধানীবাসী। দৈনন্দিন জীবনে প্রতিনিয়ত যানজট আর পরিবহনসংকটে নাকাল রাজধানীবাসী।

২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটিতে মো. আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটিতে শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হিসেবে শপথ নেন। আগের মেয়রের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার নিয়ম আছে। এ জন্য তিন মাস পর ওই বছরের ১৩ মে দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব নেন আতিকুল ইসলাম। এর আগে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে নয় মাস মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অন্যদিকে, শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০২০ সালের ১৬ মে।

আরও পড়ুন

দক্ষিণের মেয়রের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন

নির্বাচনী ইশতেহারে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর, নতুন পথে যাত্রা শুরু করার। মৃতপ্রায় নগরীকে নতুন করে জীবন দিতে তিনি পাঁচটি রূপরেখা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মোটাদাগে ৫৩টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।

প্রায় প্রতিদিনই এমন যানজটে পড়তে হয় নগরবাসীকে
ফাইল ছবি

দক্ষিণের মেয়রের নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিল কোথাও আগুন লাগার পর তা নেভানোর ব্যবস্থা আরও কার্যকর করা, মহল্লায় গাড়ি প্রবেশে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, প্রয়োজনে নিজস্ব দমকল বাহিনী গঠন ও পর্যাপ্ত পানির কলের ব্যবস্থা করা। কথা ছিল গণপরিবহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সুব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কিছু রাস্তায় দ্রুতগতির যানবাহন, কিছু রাস্তায় ধীরগতির যানবাহন আর কিছু রাস্তায় শুধু মানুষ হাঁটার ব্যবস্থা করবেন মেয়র।

মেয়র তাপস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নগরবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করবেন। প্রয়োজনীয়সংখ্যক হাসপাতাল-ডিসপেনসারি ও প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রাথমিক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপনসহ মাতৃসদন, পরিবার পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে কর্মসূচি নেবেন। শিক্ষার মানোন্নয়নে ও দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রয়োজনীয়সংখ্যক কারিগরি-ভকেশনাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নেবেন। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানসন্ততির শিক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু–কিশোরদের শিক্ষা, বিনোদন ও চিকিৎসাসেবায় পদক্ষেপ নেবেন। ডে কেয়ার সেন্টার স্থাপন করবেন।
এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা হেল্পলাইন ও নাগরিক সেবা এবং সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ নগর অ্যাপ চালু করার কথা বলেছিলেন তিনি। মেয়র শেখ তাপস আরও বলেছিলেন, নগর ভবনে নিয়ন্ত্রণকক্ষ রেখে বিভিন্ন স্থানে সিসি ক্যামেরা ও ফ্রি ওয়াই–ফাই জোন স্থাপন করা হবে। বায়ু ও শব্দদূষণ কমানোর ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন

দক্ষিণ সিটির মেয়র দেশের বাইরে রয়েছেন। গত দুই বছরে মেয়রের দেওয়া প্রতিশ্রুতির কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, তা জানতে চাইলে ডিএসসিসির মুখপাত্র ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের প্রথম আলোকে বলেন, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে একটি রুটে বাস রুট রেশনালাইজেশন চালু করা হয়েছে। আরও তিনটি রুটে বাস চালুর প্রক্রিয়া চলছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ইতিমধ্যে ৫২টি অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর এই প্রথম স্থায়ীভাবে খালগুলো দখলমুক্ত করা হয়েছে। প্রায় ৫৭৫ কোটি টাকার সম্পত্তি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন মার্কেটগুলো থেকে অবৈধ দোকানপাট ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরিকল্পিত নগরায়ণের জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ চলছে। নির্বাচনে মেয়র মহোদয় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা ধরেই তিনি এগিয়ে চলছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকার লাউতলা খাল দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল খনন চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন
ফাইল ছবি

জলাবদ্ধতা নিরসন, খাল উদ্ধার ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে দৃশ্যমান কিছু উদ্যোগ থাকলেও বাকি ক্ষেত্রগুলোয় দৃশ্যমান কিছু চোখে পড়েনি। দৈনন্দিন জীবনে রাজধানীবাসী প্রতিনিয়ত নানা সমস্যায় জেরবার হচ্ছেন।

উত্তরের মেয়রের প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবায়ন

ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলামও এই মেয়াদে দুই বছর পার করেছেন। ১৩ মে তাঁর দুই বছর পার হয়েছে। মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনিও নগরবাসীর কাছে কিছু ওয়াদা করেছিলেন, যার বেশির ভাগই বাস্তবায়নে উদ্যোগ দেখা যায়নি। যেমন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবহনব্যবস্থা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া সুনিয়ন্ত্রিত ও নারীবান্ধব গণপরিবহন নিশ্চিত করা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ‘জনতার মুখোমুখি মেয়র’ শীর্ষক নিয়মিত মতবিনিময় করে ওয়ার্ডভিত্তিক সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এসবের বাস্তবায়ন এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি।


সুস্থ ঢাকা, সচল ঢাকা ও আধুনিক ঢাকা—এই তিন রূপরেখার মাধ্যমে মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম মোটাদাগে ৩৮টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে দেখা যাচ্ছে, বেশির ভাগ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উদ্যোগও নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুন

উত্তর সিটির মেয়র বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি ফুটপাত দখলমুক্ত করে এলাকাভিত্তিক পথচারীবান্ধব ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মানুষের জন্য ফুটপাত নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নাগরিকদের জন্য গণস্থাপনা এবং গণপরিবহন নিশ্চিত করবেন। নগরীর ব্যস্ততম এলাকাগুলোয় নির্মাণ করবেন বহুতল ও আন্ডারগ্রাউন্ড পার্কিং কমপ্লেক্স। নাগরিকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পরিকল্পিত স্মার্ট বাসস্টপ ও বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করবেন।

আধুনিক ঢাকা গড়ার লক্ষ্যে একটি সার্বক্ষণিক ডিজিটাল কমান্ড সেন্টার তৈরি করে শহরের নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও স্মার্ট নেইবারহুড পরিচালনা করার অঙ্গীকার করেছিলেন আতিকুল ইসলাম। তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, উত্তর সিটিকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে কয়েকটি এলাকাকে স্মার্ট নেইবারহুড হিসেবে গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি পাড়া ও মহল্লাকে এই উদ্যোগের আওতায় আনা হবে। বায়ুদূষণ রোধে ইলেকট্রিক বাস সার্ভিস চালু করারও কথা বলেছিলেন তিনি।

ভারী বৃষ্টিতে কয়েক মাস আগে গ্রিন রোডের অবস্থা
ফাইল ছবি

এ ছাড়া মিরপুরে উত্তর সিটির নিজস্ব জায়গায় বৃক্ষপ্রেমীদের জন্য বৃক্ষ ক্লিনিক ও পোষ্য প্রাণী ক্লিনিক নির্মাণ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এসব প্রতিশ্রুতির একটিও বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

দুই বছরের অর্জন এবং জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন নিয়ে জানতে চাইলে মো. আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর নগরবাসীর যেকোনো সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে তিনি অ্যাপ চালু করেছেন। নাগরিকদের অনেকেই এই অ্যাপে এলাকার সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। তাৎক্ষণিকভাবে এর সমাধান করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুরের বছিলাতে ট্রাকস্ট্যান্ড সরিয়ে সেখানে পুনরায় খাল তৈরি করেছেন।

করোনা মহামারির কারণে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন উল্লেখ করে আতিকুল ইসলাম বলেন, মশা নিধন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এই নগরকে বাঁচাতে হলে সবার সহযোগিতা লাগবে। সব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে না পারলেও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

দুই বছরে যা হয়েছে

২০১৮ সালে ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণ করায় দুই সিটির মেয়র মশক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সজাগ ছিলেন। এতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেনি বলে দাবি দুই সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টদের। তবে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, আজিমপুর, জুরাইনসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গত বছর মশার উপদ্রবে তারা বেশ অতিষ্ঠ ছিলেন। মশার উৎপাত খুব একটা কমেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জুরাইন এলাকার এক বাসিন্দা প্রথম আলোকে বলেন, গত বছর জুরাইন এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ ছিল। ওই এলাকার বেশ কয়েকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারাও গেছেন। তিনি বলছেন, বেশি মানুষ মারা গেলেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি খারাপ বলে যদি বিবেচনা করা হয়, তাহলে হবে না। মশক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই সিটিকে আরও তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

রাজধানীতে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশনের অংশ হিসেবে যাত্রা শুরু হল ‘ঢাকা নগর পরিবহন’কোম্পানির বাস চলাচল। উদ্বোধন করেন ঢাকার দুই মেয়র আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস
ফাইল ছবি

ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে খাল ও নালার দায়িত্ব নেওয়ার পর জলাশয় থেকে জমে থাকা বর্জ্য সরাতে দুই সিটির তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এখনো ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের পানিপ্রবাহের পথ সচল রাখার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে খালের দুর্গন্ধযুক্ত পানি দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের পয়োবর্জ্যের পানির সংযোগ খাল ও নালায় না দিতে দুই সিটি অনুরোধ জানিয়ে আসছে।

রাস্তা দিয়ে পথচারীদের হাঁটার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলেও দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যাবে
আইপিডি নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

মাথার ওপর পরিষ্কার আকাশ দেখার স্বপ্ন দেখিয়ে ঝুলন্ত তার অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ তাপস। তবে এই উদ্যোগ এখন পর্যন্ত সফল না হলেও ঝুলন্ত তার অপসারণে অভিযান অব্যাহত রেখেছে সংস্থাটি।

দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দাবি করেন, বৃষ্টির পর সড়কে জমে থাকা পানি আধা ঘণ্টার মধ্যে সরে যাবে। এখনো পুরোপুরি বর্ষা মৌসুম শুরু হয়নি। তবে এর মধ্যে কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে রাজধানীর কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে রাতে বাসাবাড়ির ময়লা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছেন দক্ষিণ সিটির মেয়র। পাশাপাশি দিনের বেলায় সড়ক পরিষ্কার না করে রাতে এই কাজ চালু করেছেন তিনি। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা পুরোপুরি ফেরেনি বলে অভিযোগ আছে।

দুই মেয়র যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার কতটা বাস্তবায়িত হলো , এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক আদিল মুহাম্মদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এখতিয়ারের বাইরে গিয়েও অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। চাইলেও এর মধ্যে অনেক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। সিটি করপোরেশনকে তদারকির দায়িত্ব বেশি করে করতে হবে। কারণ, আইনে করপোরেশনকে অনেক বেশি ক্ষমতা দেওয়া হলেও সরকারের অন্য সংস্থাও নাগরিক সেবা নিয়ে কাজ করছে।

বিচ্ছিন্নভাবে নেওয়া উদ্যোগ ভালো কিছু নিয়ে আসে না। তাই বড় প্রকল্পের জন্য অপেক্ষা না করে ছোট ছোট পরিসরে কাজ করে যেতে হবে। রাস্তা দিয়ে পথচারীদের হাঁটার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলেও দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যাবে বলেও মনে করেন আদিল মুহাম্মদ খান।

এই পরিকল্পনাবিদ খাল উদ্ধারে দুই সিটির নেওয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, খাল রক্ষা করতে হলে এ কাজে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করতে হবে। জনগণের কাছে করা অঙ্গীকারের পুরোটা বাস্তবায়ন সম্ভব না হলেও সিংহভাগ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।