বুয়েটে ‘পর্দার আড়ালের অপরাজনীতি’ বন্ধ চান ছাত্রলীগ সমমনা ১৬ শিক্ষার্থী

‘ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ’ ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেন বুয়েটের ছাত্রলীগ সমমনা ১৬ শিক্ষার্থী। ঢাকা, ২৯ এপ্রিলছবি: সাজিদ হোসেন

গত বছর টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে গ্রেপ্তার বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চলমান মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের সাময়িক বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগ সমমনা ১৬ শিক্ষার্থী। একই সঙ্গে তাঁরা বুয়েটে ‘পর্দার আড়ালের অপরাজনীতি’ বন্ধ করারও দাবি তুলেছেন। ‘ভুক্তভোগী সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অংশ’ ব্যানারে তাঁরা এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি জানান।

আজ সোমবার বিকেল চারটার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনটি হয়। এর আগে তাঁরা এসব দাবি সংবলিত একটি আবেদন উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের কাছে জমা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত আবেদনটি পড়ে শোনান বুয়েটের ছাত্র মিশু দত্ত, তানভীর মাহমুদ ও সাগর বিশ্বাস। এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই সুনামগঞ্জে আটক ২৪ জন বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে করা মামলাটির সুষ্ঠু বিচার দাবি করে তাঁরা গত বছরের ৬ আগস্ট একটি মানববন্ধন করেন। কিন্তু এই মানববন্ধনে দাঁড়ানোর কারণে ছাত্রদের ডেকে ডেকে নানাভাবে জবাবদিহি করা হয়, ভয় দেখানো হয়। এ নিয়ে অভিযোগ করার পরও কোনো ধরনের তদন্ত বা দোষীদের শাস্তি হয়নি।

লিখিত আবেদনে আরও বলা হয়, বুয়েট ক্যাম্পাসে হিযবুত তাহ্‌রীর ও শিবিরের মতো মৌলবাদী সংগঠন যে সক্রিয়, সেই অভিযোগও আগে করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের সত্যতা বুয়েটের একটি সিসিটিভি ফুটেজে রয়েছে। সেই ফুটেজে যাঁদের দেখা গেছে, তাঁদের পরিচয় দ্রুত প্রকাশ করে তাঁদের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে উপাচার্যের প্রতি আহ্বান জানান এই ১৬ শিক্ষার্থী।

আরও পড়ুন

টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে শিবির সন্দেহে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের নামে সরকারের বিরুদ্ধে ‘গোপন ষড়যন্ত্র ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করার আশঙ্কায়’ সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেছিল পুলিশ। ওই মামলা এখন বিচারাধীন।

রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার মামলার যাঁরা আসামি, তাঁদের সঙ্গে একই ক্যাম্পাসে একসঙ্গে থাকাটা জীবনের জন্য হুমকি বলে মনে করছেন এই ১৬ শিক্ষার্থী। এই বিষয়ে ছাত্রলীগ সমমনা শিক্ষার্থীরা বুয়েটের উপাচার্যের উদ্দেশে বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদের সিক্রেট গ্রুপে আমাদের নাম ও পরিচয় উন্মোচন আমাদের জন্য ভীতিকর এবং আমাদের পরিচয় সেখানে উন্মোচিত করার সঙ্গে অবশ্যই বুয়েটের কেউ সংযুক্ত। কে বা কারা এটা করছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণের অনুরোধ জানাই। জামিনে থাকা আসামিদের সঙ্গে একই ক্যাম্পাসে থাকা যেহেতু খুব ভীতিকর; তাই যত দিন মামলার নিষ্পত্তি না হচ্ছে, তত দিন তাঁদের সাময়িকভাবে একাডেমিক বহিষ্কার করে ক্যাম্পাসে তাঁদের গতিবিধি রোধ করা হোক।’

পরে এক প্রশ্নের জবাবে ওই ১৬ জনের একজন আশিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, বুয়েটে তাঁরা জঙ্গিবাদ দেখতে চান না। ক্যাম্পাসে পর্দার আড়ালের অপরাজনীতি তাঁরা বন্ধ চান৷ তাঁরা নিয়মতান্ত্রিক ‘পলিসি পলিটিকসের’ পক্ষে এবং ‘পাওয়ার পলিটিকসের বিপক্ষে’। মৌলবাদী অপশক্তির বিরুদ্ধে তাঁরা সব সময় সোচ্চার।

আরও পড়ুন