চাপ নিয়ে কাজ করতে হয় চিকিৎসকদের

‘মেডি কার্নিভ্যাল, ডিবেট অ্যান্ড ফার্মা টেস্ট’ উৎসবে অতিথিদের সঙ্গে বিজয়ীরা। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর নটর ডেম কলেজ মিলনায়তনেছবি: প্রথম আলো

অন্য পেশার চেয়ে চিকিৎসকদের বেশি চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়। বিতর্ক, গান, খেলাধুলার মতো পাঠ্যবহির্ভূত কার্যক্রমের মাধ্যমে চাপমুক্ত হওয়া যায়। এ জন্য চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের এ ধরনের অনুশীলন প্রয়োজন।

‘মেডি কার্নিভ্যাল, ডিবেট অ্যান্ড ফার্মা টেস্ট’ উৎসবে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নটর ডেম কলেজে এই উৎসবের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁরা এসব কথা বলেন।

প্রথমবারের মতো আয়োজিত দিনব্যাপী এই উৎসবে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগিতায় এই উৎসবের আয়োজন করে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব মেডিকেল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (আইএফএমএসএ) বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ (এনসিডিসি) শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, চিকিৎসকেরা বেশি চাপ নিয়ে কাজ করেন। একদিকে জীবন, আরেক দিকে মৃত্যু—এর মাঝখানে চিকিৎসকেরা। তখন চাপ নিয়েই কাজ করতে হয়। গান, বিতর্ক, খেলাধুলার মতো পাঠ্যবহির্ভূত কার্যক্রম তাঁদের চাপমুক্ত থাকতে সহযোগিতা করে।

আইএফএমএসএ বাংলাদেশের এই আয়োজন চিকিৎসাবিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান, মতামত ভাগাভাগির জন্য একটি দারুণ প্ল্যাটফর্ম বলে উল্লেখ করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সৌমিত্র সরকার।

এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের বিক্রয় বিভাগের প্রধান কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, এমন আয়োজন ভালো চিকিৎসক তৈরি করতে ভূমিকা রাখবে। চারটি মহাদেশে এসকেএফ ওষুধ রপ্তানি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসকেএফ সব সময় মাননিয়ন্ত্রিত ও ভালো ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই আয়োজনে মুগদা মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জুবাইদা গুলশান আরা, কিশোরগঞ্জ মেডিকেল কলেজের গাইনি অ্যান্ড অবসের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক উৎপলা মজুমদার, মুগদা মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাসুমা খানম ও সুপ্রিম কোর্ট মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক সাবিনা শরমিনকে ‘উইমেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ফাহাদ হুসাইন।

দিনব্যাপী এই আয়োজনে ১৮টি বিভাগে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সন্ধ্যায় বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।

এর মধ্যে হ্যান্ড রাইটিং প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আফসানা হোসেন এবং রানার–আপ আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের এ এস এম আবদুল্লাহ শিহাব। মেডিকেল জিকে বিভাগে সেরা হয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফারশিদ সিকদার ও রানার–আপ এএফএমসির সাদমান আহমেদ।

ফার্মা ওএসপিই প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের আসিফ মোহাম্মদ ইউসুফ ও রানার–আপ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মো. মেহেদী হাসান। এনাটমি অলিম্পিয়ার্ডে সেরা হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সপ্তর্ষি মন্ডল ও রানার–আপ একই কলেজের আরভিন আদিত্য।

ফিজিওলজি অলিম্পিয়ার্ডে সেরা হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অভিক মল্লিক আর রানার–আপ ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রত্যয়ী বিশ্বাস। বায়োক্যামিস্ট্রি অলিম্পিয়ার্ডে সেরা হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আরভিন আদিত্য আর রানার–আপ আর্মি মেডিকেল কলেজের আসিফ আলম চৌধুরী।

প্যাথোলজি অলিম্পিয়ার্ডে সেরা হয়েছেন কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের মো. ইমরান হোসেন আর রানার–আপ রিজভী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। ক্রিমিনাল কেস প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন এসটিএএমসির রহিম হোসেন আর রানার–আপ তালহা জুবায়ের খান। প্রেসক্রিপশন রাইটিং প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আফসানা হোসেন আর রানার–আপ একই কলেজের সুমায়াত রহমান।

স্লোগান রাইটিং প্রতিযোগিতায় সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের আরাফ আমান সিয়াম আর রানার–আপ হন আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজের মো. মিনহাজুল ইসলাম। পাবলিক হেলথ কেস প্রতিযোগিতায় সেরা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের আসিফ মোহাম্মদ ইউসুফ আর রানার–আপ হন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আরাফ আমান সিয়াম।

কমিউনিটি মেডিসিন অলিম্পিয়ার্ডে সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের নওশীন শারমিলী আর রানার–আপ হয়েছেন এএসএম আবদুল্লাহ শিহাব। ক্লিনিক্যাল কেস অব মেডিসিন প্রতিযোগিতায় সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফাতেমা তুজ জোহরা আর রানার–আপ হয়েছেন একই কলেজের তালহা জুবায়ের খান।

নো দ্য প্রিপারেশনে সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের তালহা জুবায়ের খান আর রানার–আপ হন এসএসএমসির আদিবা সাইফুল মাইশা। মাইক্রোবায়োলজি অলিম্পিয়ার্ডে সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের রিজভী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আর রানার–আপ হন শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের শাদমান নেওয়াজ।

ফরেনসিক মেডিসিন অলিম্পিয়ার্ডে সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের নওশীন শারমিলী আর রানার–আপ হয়েছেন একই কলেজের কাওছার। অ্যানাটমি রাইটিং প্রতিযোগিতায় সেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজের আরাফ আমান খান আর রানার–আপ হয়েছেন একই কলেজের আরভিন আদিত্য।