ভর্তির টাকায় বাবার দাফন: মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব নিল উত্তরা ইউনিভার্সিটি

উত্তরা ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য আবিদ আজিজের নেতৃত্বে একটি দল বাড়িতে গিয়ে বীথি আক্তার এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বীথিকে ইংরেজি বিভাগে অনার্স প্রোগ্রামে বিনা মূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন তাঁরা
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার তুরাগে ভাঙারি দোকানে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া গাজী মাজহারুল ইসলামের মেয়ে বীথি আক্তারের পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। আজ বুধবার বীথি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ৪ বছর মেয়াদি অনার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা দিয়েই সারতে হলো বাবার দাফন’—শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি তাদের নজরে আসে। এরপরই বীথি আক্তারের পড়াশোনার দায়িত্ব গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। পড়াশোনা চলাকালীন মেয়েটিকে আর্থিকসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

উত্তরা ইউনিভার্সিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আজ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য আবিদ আজিজের নেতৃত্বে একটি দল বাড়িতে গিয়ে (তুরাগের রাজাবাড়ি) বীথি আক্তার ও তাঁর মা রোকসানা আক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বীথিকে ইংরেজি বিভাগে ৪ বছর মেয়াদি অনার্স প্রোগ্রামে বিনা মূল্যে পড়াশোনা করার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

বীথি আক্তার আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘উত্তরা ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বাসায় এসে ভর্তির জন্য সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে। তারা বলেছে, সব ধরনের সহযোগিতা করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে বাবাকে হারানোর যে ক্ষতি, সেটা তো আর পূরণ হবে না। আমার বাবা নেই, তাই আমি পৃথিবীর সবচেয়ে গরিব।’

নিহত গাজী মাজহারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

গত শনিবার দুপুরে বাবার কাছ থেকে ১২ হাজার ৮০০ টাকা নিয়ে উত্তরা ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে গিয়েছিলেন বীথি। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন টাকা জমা দেবেন, তখনই মুঠোফোনে জানতে পারেন বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন বাবা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়েই ছুটে যান হাসপাতালে। রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবা। তাঁর দাফনে ব্যয় হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বাবার দেওয়া সেই টাকা। আকস্মিক বাবাকে হারানোয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নটাও উবে যায় বীথির।

আরও পড়ুন

বীথি আক্তারের বাবা ঢাকার তুরাগের রাজাবাড়ি এলাকায় ভাঙারি দোকানে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মারা যান। শনিবার দুপুরের ওই বিস্ফোরণে মাজহারুলসহ আটজন দগ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। মাজহারুল ছিলেন ওই দোকান ও গ্যারেজের মালিক।

আরও পড়ুন