৭ ঘণ্টা পর বনানীর সড়ক ছাড়লেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা, অবরোধে ভোগান্তি
প্রায় ৭ ঘণ্টা অবরোধের পর রাজধানীর বনানীর সড়ক থেকে সরে গেছেন বিক্ষুব্ধরা শ্রমিকেরা।
বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা আজ সোমবার সকাল ৭টার দিকে সড়ক অবরোধ করেছিলেন। অবরোধের কারণে বনানীসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
এমনকি এই যানজটের প্রভাব রাজধানীর অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়ে। যানজটে আটকা পড়ে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।
বনানী থানার পুলিশ বলছে, আজ সকাল ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় কলাবাহী একটি পিকআপের চাপায় মিনা আক্তার নামের এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। তাঁরা বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে মহাখালীর আমতলী পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন। এতে দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে।
প্রায় ৭ ঘণ্টা পর শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়েন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। শ্রমিকেরা সরে যাওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরোয়ার বলেন, পিকআপটি ইতিমধ্যে পুলিশ জব্দ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তেজগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িটিকে জব্দ করা হয়। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। তাঁকে আটক করার চেষ্টা চলছে।
সড়ক অবরোধ চলাকালে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় যানবাহন আটকে আছে। এ কারণে যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে বিপাকে পড়েন। তাঁদের অনেকে উপায় না দেখে হেঁটেই যাত্রা শুরু করেন।
তেমনই একজন ফররুখ আহমেদ। তিনি গ্রিন রোড এলাকায় অবস্থিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ফররুখ বলেন, তিনি বিমানবন্দর থেকে দু-আড়াই ঘণ্টা হেঁটে মহাখালী পর্যন্ত এসেছেন।
কুমিল্লার বাসিন্দা কামরুল হাসান সৌদি আরব যাবেন। তাঁর ফ্লাইট বেলা ২টা ২৫ মিনিটে। যানবাহন না পেয়ে তিনি হেঁটে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন।
কামরুল হাসান বলেন, কুমিল্লা থেকে গাড়িতে তেজগাঁও পর্যন্ত এসেছেন। রাস্তা বন্ধ শুনে হেঁটে রওনা দেন তিনি।
এনা পরিবহনের বাসচালক হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সিলেট থেকে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে বনানীতে পৌঁছান তিনি। এরপর বাসটি আটকে দেন শ্রমিকেরা। তখন থেকে একই জায়গায় আটকে ছিলেন তিনি। এ কারণে বাস থেকে সব যাত্রী নেমে গেছেন।
স্কুলবাসের চালক শহিদুল ইসলাম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গুলশান থেকে তিনি উত্তরা যাচ্ছিলেন। সকাল ৭টা ২২ মিনিটের দিকে গাড়িসহ আটকে পড়েন তিনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. তারেক মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে আছে পিকআপ ও চালককে আটক, ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করা। পিকআপটি ইতিমধ্যে জব্দ হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। আর ক্ষতিপূরণ ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা আলোচনা করবেন। দাবি পূরণের আশ্বাসে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দেন; যান চলাচল শুরু হয়।