সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে থেকে আলামত সংগ্রহ করছে সিআইডি
ছবি: দীপু মালাকার

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারের সাততলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় অবহেলার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বংশাল থানায় মামলা করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মো. জাফর হোসেন আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, অবহেলার অভিযোগে ৩০৪ (ক) ধারায় মামলা হয়েছে। আসামি অজ্ঞাতনামা রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিস্ফোরণে ভবনের মালিক, গ্যাস, নকশাসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের কার দায় রয়েছে, সেটা তদন্তে ওঠে আসবে।

৩০৪ (ক) ধারায় বলা হয়েছে,যদি কোনো ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা অবহেলার কারণে কারও মৃত্যু ঘটান এবং তা যদি শাস্তিযোগ্য নরহত্যা না হয়, তবে সে ব্যক্তি পাঁচ বৎসর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয়বিধ দণ্ডেই দণ্ডিত হবেন।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দলের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, তিতাসের পরিত্যক্ত লাইনের ছিদ্র থেকে বের হওয়া গ্যাস জমে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে ভবনের বেজমেন্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন

ভবনটির ধসে পড়া ঠেকাতে কাজ চলছে

গত মঙ্গলবার বিকেলে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের একটি সাততলা ভবনের বেজমেন্ট থেকে দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল দুপুরে ভবনের বেজমেন্টের দক্ষিণ পাশের সিঁড়ির নিচ থেকে মেহেদী হাসান নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। রাত সাড়ে আটটার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরাফাত ইয়াসিন নামের আরও একজন। তিনি ভবনে থাকা একটি স্যানিটারি দোকানের কর্মী ছিলেন। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন শতাধিক ব্যক্তি। এর মধ্যে এখনো চিকিৎসাধীন ২৩ জন।

আরও পড়ুন

তিতাসের ‘গ্যাস থেকে’ বিস্ফোরণ

এদিকে গতকাল ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ভবনমালিকসহ তিনজনের দুই দিনের করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবনটির মালিক, তত্ত্বাবধানকারী ও কয়েকজন দোকানিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এরপরই গতকাল ভবনটির মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের একটি দোকানের মালিক আবদুল মোতালিব হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ভবনটির মালিক রেজাউর রহমান মারা যাওয়ার পর তাঁর তিন ছেলে ওয়াহিদুর রহমান, মশিউর রহমান ও মতিউর রহমান মালিক হন। তাঁদের মধ্যে বড় ভাই ওয়াহিদুর রহমান ও ছোট ভাই মতিউর রহমান ভবনটি পরিচালনা করেন। মেজ ভাই মশিউর রহমান লন্ডনপ্রবাসী।