সিঁদুর খেলে রঙিন মুখে দেবীকে বিদায়ের প্রস্তুতি
বিজয়া দশমীর দিনে আজ বুধবার রাজধানীর খামারবাড়ি পূজামণ্ডপে ভক্তদের ভিড় দেখা গেছে। বিদায়ের এ সময়ে দেবী দুর্গাকে হাসিমুখে বিদায় জানাতে সিঁদুর খেলে রঙিন মুখে চলছে প্রস্তুতি।
ভক্তরা প্রথমে সারিবদ্ধভাবে দেবী দুর্গাকে সিঁদুর পরিয়ে দেন। পরে একে অন্যের সিঁথিতে পরিয়ে দেন লাল সিঁদুর।
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বলেন, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গা আবার মর্ত্যলোক ছেড়ে স্বর্গলোকে যাবেন। দেবীর বিদায়বেলায় কষ্ট ভুলে হাসিমুখে বিদায় জানানোর জন্য তাঁরা মেতেছেন সিঁদুর খেলায়।
বেলা ১১টার দিকে দেখা যায়, মণ্ডপের এক পাশে নারীদের সারি। সবার হাতে থাকা প্লেটে সিঁদুর আর অঞ্জলি। মঞ্চে উঠে তাঁরা দেবীকে প্রণাম করে সিঁদুর মেখে দিচ্ছিলেন। তারপর হাতজোড় করে প্রার্থনা করেন। মঞ্চ থেকে নেমে এসে একে অপরের কপালে ও গালে সিঁদুর মেখে দেন। এ সময় কেউ কেউ একে অপরকে মিষ্টিমুখ করান।
দেবীকে সিঁদুর পরিয়ে নিজেদের মধ্যেও সিঁদুর মাখছিলেন তেজকুনিপাড়ার বাসিন্দা সুমিত্রা বসু ও কৃষ্ণা দাস। তাঁরা একে অপরের কপালে ও গালে সিঁদুর মেখে দেন।
সুমিত্রা বসু প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারের আয়োজন সব মিলিয়ে খুব ভালো হয়েছে। দেবী মায়ের কাছে সবার জন্য মঙ্গল কামনা করেছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত কয়েক বছর পূজার সময় একধরনের দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠা ছিল।’ এ সময় পাশেই থেমে থেমে বেজে উঠছিল ঢাকের বাজনা। তালে তালে নাচে নানা বয়সের নারী ও পুরুষেরা।
দেবীর পায়ে সিঁদুর মাখিয়ে দেওয়া এক নারী জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বী বিবাহিত নারীদের সিঁদুর গুরুত্বপূর্ণ। দশমীর দিন তাঁরা দেবী দুর্গার পায়ে সিঁদুর লাগিয়ে স্বামীর মঙ্গল কামনা করেন। যেন সারা বছর পরিবারের সবাইকে নিয়ে আনন্দে থাকতে পারেন।
খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনের পাশে দুর্গাপূজার আয়োজন করেছে সনাতন সমাজ কল্যাণ সংঘ। এর সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে প্রথমে দশমী পূজা হয়েছে।
পূজারিরা পরে অঞ্জলি দেন। বেলা ১১টার দিকে দেবীকে সিঁদুর পরানো হয়। দেড়টার দিকে বিসর্জনের জন্য যাত্রা শুরু করবেন বলে জানান। এ মণ্ডপ থেকে পাঁচটি গাড়িতে বিসর্জনের শোভাযাত্রা হবে।
সংঘের দপ্তর সম্পাদক সত্তেন্দু মজুমদার বলেন, ‘মায়ের কাছে ভ্রাতৃত্ববোধ যাচনা করেছি। আমরা কোনো বিদ্বেষ ও হানাহানি চাই না। ধর্মীয় সম্প্রীতির অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চাই।’