জঙ্গল সলিমপুরে ২৪ হাজার পরিবারকে উচ্ছেদ করে পার্ক নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে

জঙ্গল সলিমপুর ছিন্নমূল ভূমিহীন কল্যাণ পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা
ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে জঙ্গল সলিমপুর ছিন্নমূল ভূমিহীন কল্যাণ পরিষদ। তারা বলছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গল সলিমপুরে প্রায় ২৪ হাজার ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করে সাফারি পার্ক নির্মাণের পাঁয়তারা চলছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরিষদ ওই সংবাদ সম্মেলন করেছে।

আজ রোববার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মনজুর হোসেন। তিনি বলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন তাঁরা। ভূমিদস্যুদের খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন

স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শব্দসৈনিক মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না। সেখানে এতগুলো পরিবারকে তাদের দীর্ঘদিনের আবাস থেকে উচ্ছেদ মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে এ অন্যায়ের প্রতিকার করতে হবে।

আরও পড়ুন

জঙ্গল সলিমপুর ছিন্নমূল ভূমিহীন কল্যাণ পরিষদ বলছে, হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ২৪ হাজার ভূমিহীন পরিবার উচ্ছেদ করে নাইট সাফারি পার্ক নির্মাণ করার চেষ্টা করছে একটি মহল। এ কাজে তাদের সহায়তা করছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক। ৮ সেপ্টেম্বর সেখানে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন সেখানকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা।

ওই পরিষদ আরও বলছে, বছরের পর বছর পাহাড় কেটে জায়গাটিকে বসবাসের উপযোগী করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ২০১০ সাল থেকে সেখানে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এখন প্রায় ১২ হাজার ভোটার বাস করছেন সেখানে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্তানেরা স্বাবলম্বী হতে শুরু করেছে। ১৫ সেপ্টেম্বর ৩৫০ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেবে। এলাকায় ১০টি কিন্ডারগার্টেন, ১৫টি মাদ্রাসা, ১৮টি মসজিদসহ রয়েছে বেশ কয়েকটি মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, বাজার, মাজার, গোরস্তান, শ্মশান। এ রকম একটি জায়গার বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে নাইট সাফারি পার্ক নির্মাণ করা অন্যায়।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদ বলেছে, গত বছরের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন যে জঙ্গল সলিমপুরের ২৪ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদ করা যাবে না। অথচ উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে ২২ দিন এলাকাটি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল। ওই এলাকায় পুলিশ, র‍্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে প্রায় তিন হাজার মানুষ চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে সীতাকুণ্ডের উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বিদ্যুৎ–সংযোগ স্বাভাবিক হয়। কিন্তু পরে একটি পরিকল্পিত দুর্ঘটনায় ৪৫ জনকে এজাহারভুক্ত করে ৮৮৫ জনকে আসামি করে ৭টি মামলা করে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় এস এম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সালাম, মানবাধিকারকর্মী রফিকুল ইসলাম সম্রাট, জাতীয় মানবাধিকার সমিতির সভাপতি মনজুর হোসেন, স্থানীয় বাসিন্দা চিকিৎসক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।