আরমানীটোলায় আগুনে একজনের মৃত্যু, আহত ১৮

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের উদ্ধার তৎপরতা
ছবি: সময় টেলিভিশনের সৌজন্যে

রাজধানীর পুরান ঢাকায় আরমানীটোলায় ছয়তলা ভবনে আগুনের ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের তিন কর্মীসহ অন্তত ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভবনটির নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আজ ভোর সোয়া তিনটার দিকে ভবনটির নিচতলা থেকে আগুন শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ভোর ছয়টার দিকে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হয়। এতে জানানো হয়, আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত অবস্থায় বিভিন্ন ফ্লোর থেকে ১৫ জনকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন অগ্নিদ্বগ্ধ হয়েছেন। অন্যরা নানাভাবে অসুস্থ হয়েছেন। আর ফায়ার সার্ভিসের তিন কর্মীর মধ্যে একজনের পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে, তাঁকে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।


ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, আগুন আর ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা নেই। নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। তাই পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরও সময় লাগবে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই ভবনের প্রায় সব ফ্লোরে ঢুকে দেখেছেন। সেখানে আর কেউ নেই। সবাইকে ইতিমধ্যে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

এর আগে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত মাহফুজ রিবেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ ভোর তিনটা ১৮ মিনিটে ছয় তলা ওই ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে আরও ৭ টি ইউনিট কাজে যোগ দেয়। সর্বশেষ মোট ১৯টি ইউনিটে সেখানে কাজ করে।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন


ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, আগুন লাগার পর পর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় ভবনের নিচতলা। ধীরে ধীরে ধোঁয়া উঠতে থাকে ওপরের দিকে। এতে ওপরের তলার বাসিন্দারা আগুনের বিষয়টি টের পান। এ সময় মানুষজন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলেও ধোঁয়া ও আগুনের কারণে বের হতে পারেনি। তাঁরা ওপরের দিকে উঠতে থাকেন। তবে ভবনের ছাদ তালাবদ্ধ থাকায় কেউ ওপরে উঠতে পারেননি। বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করতে থাকেন। আটকে পড়া বাসিন্দারা বারান্দা ও জানালা থেকে মোবাইলের আলো জ্বেলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন।

ভোর পৌনে ৫টার দিকে বিভিন্ন ফ্লোর থেকে অন্তত ১৩/১৪জনকে ক্রেন ব্যবহার করে বের করে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাঁরা বারান্দার গ্রিল কেটে বাসিন্দাদের উদ্ধার করেন। ভোর পাঁচটার দিকে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে একে একে আটকে পড়া সবাইকে উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।


ওই ভবনের পাশের একটি ভবনের একজন বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ওই ভবনের নিচে রাসায়নিকের গুদাম রয়েছে। তাঁর দাবি, আশপাশের প্রায় সব ভবনেই এ ধরনের গুদাম রয়েছে।