বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সপরিবার সড়কে

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সপরিবার মোখলেছুর রহমানের অবস্থান
ছবি: প্রথম আলো

বছরের শেষ দিন আজ শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্ত্রী ও কন্যাশিশুকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থান নেন মোখলেছুর রহমান। তাঁদের সামনে চারটি প্ল্যাকার্ড। তিনটিতে বাল্যবিবাহবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান। অন্যটিতে নারীদের উত্ত্যক্তকরণবিরোধী স্লোগান।

মোখলেছুর প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে তিনি আজ সপরিবার এই কর্মসূচি পালন করেন।

প্ল্যাকার্ডগুলোতে লেখা ছিল, ‘পুতুল বিয়ে দেবার বয়সে মেয়ের বিয়ে নয়’, ‘বাল্যবিবাহ রোধে চাই সরকারি-বেসরকারি দৃঢ় উদ্যোগ, চাই জনসচেতনতা’, ‘বাল্যবিয়ে একটি সামাজিক অপরাধ’, ‘বাল্যবিয়ে করা এবং দেওয়া থেকে বিরত থাকুন’, ‘নারী উত্ত্যক্তকরণ বন্ধ করো’, ‘উত্ত্যক্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই’।

মোখলেছুরের বাড়ি কিশোরগঞ্জে। তিনি রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। বর্তমান একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করছেন।

২০১৩ সাল থেকে মোখলেছুর নানান সমস্যা ও অসংগতির বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে এককভাবে কাজ করে আসছেন।
মোখলেছুরের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার। তিনি নরসিংদী সরকারি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী।

মোখলেছুর-তাহমিনা দম্পতির মেয়ের নাম হৃদিতা মেহরুন। সে শিশু শ্রেণিতে পড়ে।

আরও পড়ুন

মোখলেছুর প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক সমস্যা। বাল্যবিবাহ শিশুর অধিকার লঙ্ঘন করে। দেশের নানা প্রান্তের কোমলমতি শিশুরা প্রতিনিয়ত বাল্যবিবাহ নামের ব্যাধির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারে এ ধরনের বিয়ের হার খুব বেশি। বাল্যবিবাহের কারণে শিশুদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত হচ্ছে। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ের ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ, শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, পুষ্টিহীনতাসহ নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

আরও পড়ুন

মোখলেছুর আরও বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে চাই আইনের সঠিক প্রয়োগ। চাই অভিভাবকদের সচেতনতা, সামাজিক সচেতনতা, উত্ত্যক্তকারীদের উপযুক্ত শাস্তি।

মোখলেছুরের স্ত্রী তাহমিনা বলেন, ‘সাধারণত অন্য সময় এমন কর্মসূচিতে আসার সুযোগ পাই না। আজ সুযোগ হয়েছে, তাই এসেছি। আর বিষয়টা যেহেতু কন্যাশিশুর জন্য জরুরি, তাই আমার এই কর্মসূচিতে আসার আগ্রহটা বেশি কাজ করেছে।’
তাহমিনা মনে করেন, বাল্যবিবাহ ঠেকানোর পাশাপাশি কন্যাশিশুর জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়তে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।